জেলা পরিষদ নির্বাচন

খুলনায় দুই প্রার্থী কোটিপতি, অন্যজন লাখ টাকার মালিক

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা : খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের দুই প্রার্থী কোটিপতি। হাতে নগদ টাকা ছাড়াও তাদের রয়েছে বাড়ি, গাড়ি ও জায়গা-জমিসহ ব্যাংক ব্যালেন্স। তবে তাদের তুলনায় অপরজন লাখ টাকার মালিক। তিনি বাড়ি, গাড়ি ও জায়গা-জমির মালিক নন। সম্পদের দিক থেকে এগিয়ে থাকা চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ এবং প্রাক্তন আওয়ামী লীগ নেতা অজয় সরকার। শেখ হারুনুর রশিদের দৃশ্যমান সম্পদের পরিমাণ কয়েক কোটি টাকার। শুধু নগদ ও ব্যাংকে তার ৩ কোটি ৬১ লাখের বেশি টাকা রয়েছে। এ ছাড়া আছে কৃষিজমি, বাড়ি ও একাধিক ফ্লাট। অন্যদিকে অজয় সরকারের বার্ষিক আয় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতিমাসে গড়ে ১১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা আয় করেন তিনি। নির্বাচনী হলফনামায় নিজের আয় ও সম্পদ সম্পর্কে এমন তথ্যই দিয়েছেন খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্রের সঙ্গে তারা নিজেরাই এসব তথ্য প্রদান করেন। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, এ বছর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সদ্য প্রাক্তন প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী রূপসা উপজেলার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শেখ আলী আকবর এবং অজয় সরকার। প্রার্থীরা সবাই স্নাতক উত্তীর্ণ। প্রার্থীদের হলফনামায় দেখা গেছে, চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত শেখ হারুনুর রশীদের আয়ের উৎস বাড়িভাড়া, জেলা পরিষদ প্রশাসকের সম্মানী, এফডিআর ও সঞ্চয়পত্রের সুদ। এ ছাড়া মাছ চাষ করেন তিনি। এসব খাত থেকে প্রতিমাসে তার আয় ৪ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। প্রতিবছর কৃষি খাত থেকে ৫০ হাজার, বাড়ি ভাড়া থেকে ৫ লাখ ৭৪ হাজার, ব্যবসা থেকে ৪০ লাখ, শেয়ার ও সঞ্চয়পত্র থেকে ৩ লাখ ৭২ হাজার এবং  জেলা পরিষদ থেকে ৩ লাখ ৬৬ হাজার টাকা সম্মানী নিয়েছেন তিনি। তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ রয়েছে ৫৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। এ ছাড়া ব্যাংকে ৩ কোটি ৫ লাখ ৬৫ হাজার, এফডিআর ও সঞ্চয়পত্র রয়েছে ১৯ লাখ টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে শেখ হারুনুর রশীদের ৫ একর কৃষিজমি, ৬৬ শতক অকৃষিজমি, একটি ৪ তলা এবং ১৩০০ বর্গফুটের একটি একতলা ভবন। এ ছাড়া ১৪৩৪ বর্গফুটের একটি এবং ১৭৯০ বর্গফুটের দুটি ফ্লাট রয়েছে বলে হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেছেন। হলফনামায় দেখা গেছে, স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী অজয় সরকারের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে হত্যাসহ দুটি মামলা ছিল। দুটিতেই তিনি খালাস পেয়েছেন। প্রতিবছর কৃষিখাত থেকে তিনি ৬৬ লাখ টাকা এবং ব্যবসা থেকে ৭০ লাখ টাকা আয় করেন। তার কাছে এখন নগদ ২৫ লাখ এবং ব্যাংকে ১ কোটি টাকা জমা রয়েছে। স্থাবর সম্পদ বলতে দুই হাজার একর ঘেরের মালিক তিনি। অবশ্য এটা ইজারা বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি। অপর প্রার্থী শেখ আলী আকবর কৃষিখাত থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় এবং হাতে নগদ ১ লাখ টাকা ছাড়া হলমনামায় আর কিছুই উল্লেখ করেননি। এ প্রসঙ্গে অজয় সরকার বলেন, আমার মৎস্য খামার, পোল্ট্রি ফার্ম ও কৃষিজমি আছে। এই সব আয় একসঙ্গে কৃষি খাতে দেখানো হয়েছে। এ ছাড়া আমার ঠিকাদারি ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে। নিউজ ৭১ ডটকম নামের পোর্টালের ভিউয়ার্স প্রায় ২২ লাখ। এখানে প্রচুর বিজ্ঞাপন আসে। এ ছাড়া ঠিকাদারি কাজের আয়ও ব্যবসা খাতে দেখানো হয়েছে।  

   

রাইজিংবিডি/খুলনা/২ ডিসেম্বর ২০১৬/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/রিশিত