জেলা পরিষদ নির্বাচন

ভুলু দাবি করলেন তিনিই আ.লীগের প্রার্থী

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল : জেলা পরিষদ নির্বাচনে বরিশাল জেলায় খান আলতাফ হোসেন ভুলু নিজেকে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী দাবি করেছেন।

 

২৫ নভেম্বর দলীয় মনোনয়ন বোর্ড খান আলতাফ হোসেন ভুলুকে সমার্থন দেয়। পরে ১ ডিসেম্বর তার নাম বাদ দিয়ে সেখানে মো. মাইদুল ইসলামের নাম ঘোষণা করেন দলীয় মনোনয়ন বোর্ড।

 

কিন্তু সোমবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বরিশালের একটি হোটেল রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলন করে খান আলতাফ হোসেন ভুলু নিজেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বলে দাবি করেন।

 

এ সময় তিনি জানান, তার নাম বাদ দিয়ে অন্য আর একজনকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে এমন গুঞ্জন বা ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত ও রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভুত। তাই তিনি ঢাকায় গিয়ে দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেন শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে।

 

এ সময় নেত্রী তাকেই আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণের নির্দেশ দেন এবং নির্বাচিত হয়ে তার সঙ্গে দেখা করার কথা বলেন।

 

সংবাদ সন্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথার বরাত দিয়ে খান আলতাফ হোসেন ভুলু বলেন, “নেত্রী আমাকে বলেছেন, ‘আপনার সমর্থন পরিবর্তন হয়েছে এই মর্মে আপনার কাছে কি দলীয় কোনো চিঠি দেওয়া হয়েছে? আপনাকে কি দল থেকে কেউ যোগাযোগ করে আপনার সমর্থন পরিবর্তন হয়েছে এ কথা বলেছেন?’ উত্তরে আমি বলেছি না।”

 

তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল ফারুক খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আক্তারুজ্জামান ও রিয়াজুল কবির কাওসার।

 

আজ তিনি সংবাদ সন্মেলনের মাধ্যমে সাংবাদ কর্মীদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেকে একমাত্র আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে দাবি করেন। আর যারা আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছে তা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে তিনি দাবি করেন।

 

সংবাদ সন্মেলনে মো. মাইদুল ইসলামকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বলে দাবি করেন তিনি।

 

এদিকে ১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড কর্তৃক বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে খান আলতাফ হোসেন ভুলুর নাম বাদ দিয়ে মো. মাইদুল ইসলামকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে মর্মে দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত একটি চিঠির অনুলিপি সংবাদ কর্মীদের কাছে দেওয়া হয়েছে।

 

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, খান আলতাফ হোসেনকে ২৫ নভেম্বর সমর্থন দেওয়া হয়েছিল। ১ ডিসেম্বর তার নাম বাদ দিয়ে আমাকে সমর্থন দেওয়া হয়। যা মনোনয়ন বোর্ডের ওই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে।

 

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ আমাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছে। এরপরও খান আলতাফ হোসেন ভুলু নির্বাচন করলে তিনি হবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী।

 

এই বিষয়ে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তালুকদার মোহাম্মাদ ইউনুস বলেছেন, খান আলতাফ হোসেনকে ২৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগ সমর্থন দিয়ে ছিল। পরে যোগ্যতা আর দক্ষতার দিক বিবেচনা করে মো. মাইদুল ইসলামকে দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমর্থন দেন। ইতোমধ্যে দলীয় নেত্রীর স্বাক্ষরিত ওই মনোনয়নপত্রটি আমাদের কাছে এসে পৌঁছেছে। আমরা দলের নেতা-কর্মীদের বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করেছি। সেখানে অন্য কেউ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দাবি করতে পারে না।

 

জেলা পরিষদ নির্বাচনে বরিশালের চার চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ইতোমধ্যে তাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছে রিটার্নিং অফিসার। তারা হলেন, মো. মইদুল ইসলাম, মো. হোসেন চৌধুরী, খান আলতাফ হোসেন ভুলু ও গোলাম ফারুক।

 

আগামী ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে পারবেন বলে জানান রিটার্নিং অফিসার জেলা প্রশাসক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান।

 

আগামী ২৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বরিশাল জেলা পরিষদে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের মোট এক হাজার ২৪৬জন ভোটার ভোট দিবেন।

   

রাইজিংবিডি/বরিশাল/৫ ডিসেম্বর ২০১৬/জে. খান স্বপন/রুহুল