ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সৈয়দ আকরম হোসেন: জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

শরীফ আতিক-উজ-জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৫৮, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সৈয়দ আকরম হোসেন: জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

সৈয়দ আকরম হোসেন

প্রকৃত জ্ঞানতাপস স্বভাবে নিভৃতচারী হন। সব ধরনের কোলাহল-হইচই থেকে নিজেকে সযত্নে দূরে সরিয়ে রাখেন। অতিপ্রশংসায় যেমন উৎফুল্ল হন না, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নিন্দায় তেমনি মুষড়ে পড়েন না। সবকিছুকে নির্মোহ দৃষ্টিতে বিচার করার বিশেষ যোগ্যতা অর্জন করেন। আবেগ ও যুক্তির মাঝে চমৎকার ভারসাম্য বজায় রেখে চলেন। চরিত্রের ঋজুতা দিয়ে দুর্দৈব মোকাবেলা করেন। ভোগের ইচ্ছাকে তাচ্ছিল্যে দূরে সরিয়ে রেখে নান্দনিকতা দিয়ে সৃষ্টির রূপ-রস-গন্ধ উপভোগ করেন। নিজে আলোকিত হন, অন্যের মাঝে আলো জ্বালেন এবং সমাজে আলো ছড়ান। তাঁদের সংস্পর্শে মানুষ জীবনের নতুন নতুন অর্থ খুঁজে পান। সৈয়দ আকরম হোসেন তেমনই বিরল বৈশিষ্ট্যের প্রাজ্ঞজন যিনি বিভিন্ন দিক দিয়েই ব্যতিক্রম ও অনন্য। শিক্ষক-গবেষক-লেখক-সম্পাদক ইত্যাদি বহুমাত্রিক পরিচয়ে ঈর্ষণীয় সাফল্য তাঁকে এদেশের বুদ্ধিজীবীমহলে আলাদাভাবে চিহ্নিত করেছে।

তাঁর সাথে পরিচয় ‘উলুখাগড়া’র সূত্র ধরে। দেখতে দেখতে এক যুগ পার হয়ে গেছে। ব্যাপ্তির বিচারে সময়টা খুব কম নয়। এর মাঝে এতটাই তাঁর স্নেহ ও প্রশ্রয় পেয়েছি যে, কোনো কিছুর সাথেই তার তুলনা চলে না। হৃদয়ের উষ্ণতায় অন্যকে কাছে টেনে নেয়ার সহজাত গুণের অধিকারী মানুষটি খুব সহজেই দ্রুত আমার শ্রদ্ধা কেড়ে নিয়েছেন। তাঁর বহুমাত্রিক অনন্যতার এ আরেক বিশেষ দিক। আমি প্রান্তবাসী, সাহিত্যের পাঠদান পেশা, আর তার অনুশীলন নেশা। সবকিছুর প্রচার-প্রসারের কেন্দ্র রাজধানীতে গেলেই আজিজ সুপার মার্কেটের বইপাড়ায় ঢুঁ মারা অভ্যাস। সেখানেই একদিন প্রথম নজরে পড়েছিল ‘উলুখাগড়া’, সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক ত্রৈমাসিক। চোখ আটকে গিয়েছিল ব্যতিক্রমধর্মী প্রচ্ছদে। একেবারেই সাদামাটা, বহুবর্ণে জ্যাবড়া করে তোলা নয়, একরঙা জমিনের ওপর সাদাকালো অক্ষর। প্রথিতযশা শিল্পীর নির্মাণ হলেও তা যে তাঁর মতো শিল্পবোধসম্পন্ন মানুষের চাহিদা অনুযায়ী নির্মিত ও নির্বাচিত তা ভাবতে ভুল হয় না। পাতা উল্টে দেখেছিলাম পত্রিকার সম্পাদক সৈয়দ আকরম হোসেন। তাঁর নামের সাথে সেই প্রথম পরিচয়। এই বিলম্বের জন্য বহুবার আমি আফসোস করেছি। পাতা উল্টে দেখেছিলাম কবিতা, গল্প, প্রবন্ধ, অনুবাদ, গ্রন্থসমালোচনার মতো সাহিত্যের নিয়মিত বিভাগের সাথে ‘বিশেষ সংযোজন’ শিরোনামে বিশ শতকের প্রতীচ্য সাহিত্য ও সমালোচনা তত্ত্বের মাঝারি মাপের এক সম্ভার। দুই বাংলার বিশিষ্ট লেখকরা সেখানে লিখেছেন এবং পরবর্তী সংস্করণে এই বিষয়ে আরো লেখা সন্নিবেশিত হওয়ার অগ্রিম ঘোষণাও রয়েছে। অক্ষরবিন্যাস থেকে পৃষ্ঠাসজ্জা পর্যন্ত সবকিছুতেই পরিচ্ছন্নতার একটি ছাপ নজর কেড়েছিল। প্রাথমিক মুগ্ধতা কাটিয়ে ওই পত্রিকায় লেখার ইচ্ছা থেকেই সাহস করে তাঁকে ফোন করেছিলাম। কুণ্ঠার সাথে পরিচয় দিয়ে নিজের প্রকাশিত দুই একটি বই পাঠানোর আগ্রহ জানিয়ে তাঁর ডাকঠিকানা চেয়ে নিয়েছিলাম। প্রথম কথা বলার দিন থেকেই আন্তরিক উষ্ণতার যে অকৃত্রিমতা উপলব্ধি করেছি, আজও তার কোনো ঘাটতি লক্ষ করিনি। বইগুলো পাঠিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানার জন্য দ্বিতীয়বার ফোন করার সংকোচ কাটাতে অনেক সময় নিয়েছি। ভেবেছি হয়তো এইবার নির্লিপ্ত কণ্ঠে নিরুৎসাহব্যঞ্জক কোনো ভাষণ শুনব যার অভিজ্ঞতা বড় লেখকদের কাছ থেকে আগেই একাধিকবার লাভ করেছি। কিন্তু ফোন করতেই তিনি অবাক করে দিয়ে আমাকে বললেন, ‘তুমি কবে লেখা পাঠাচ্ছ?’

হতবিহ্বল আমি সময় নিয়েছিলাম উত্তর দিতে। তারপর থেকে ‘উলুখাগড়া’য় আমার গল্প ও প্রবন্ধ ছাপা হয়েছে যার ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রয়েছে।

একটি পত্রিকা থেকে সেদিন একজন মানুষকে জানার আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে তাঁর সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়ে আমি বিস্মিত হয়েছি। যিনি শিক্ষার্থী-বান্ধব অসাধারণ এক শিক্ষক, যাঁর রবীন্দ্র-মূল্যায়ন প্রচলিত সমালোচনার খোলনলচেই বদলে দিয়েছে; সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ্‌ এবং বাংলাদেশের সাহিত্য প্রসঙ্গে যাঁর মননশীল রচনা দুই বাংলাতেই বিদগ্ধজনের অকুণ্ঠ প্রশংসা কুড়িয়েছে; ঢাকা বিশ্বদ্যিালয়ের মতো বনেদি প্রতিষ্ঠানে যিনি অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন, তাঁর পরিচয়ের গণ্ডি কেন আরো বিস্তৃত নয়? তাঁর ‘রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস: দেশকাল ও শিল্পরূপ’, ‘রবীন্দ্রনাথের উপন্যাস: চেতনালোক ও শিল্পরূপ’, ‘বাংলাদেশের সাহিত্য ও অন্যান্য প্রসঙ্গ’, ‘প্রসঙ্গ: বাংলা কথাসাহিত্য’, ‘সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ্‌’ ইত্যাদি অমূল্য গ্রন্থগুলো খ্যাতনামা বিক্রয়কেন্দ্রেও কেন মেলানো যায় না? নিজের মতো করেই উত্তর খুঁজে নিয়েছি। জ্ঞান নিভৃত এক সাধনা। বুদ্ধিজীবীর উত্তরীয় গায়ে প্রতিনিয়ত সভা-সমিতিতে বাণী দানের বিচিত্র প্রতিযোগিতায় নামতে যাঁর রুচিতে আটকায়, ‘এখানে সভাপতি ভাড়া পাওয়া যায়’-  জাতীয় তকমা গায়ে সাঁটতে যাঁর বরাবরের আপত্তি, তিনিতো অচেনা হবেনই। পত্রিকার পাতায়, টেলিভিশনের টকশোতে, সভা-সমিতির মঞ্চে চেহারা দেখা যায় না বলে এবং দেশের গড়পড়তা পাঠকমান বিবেচনায় নিলে তাঁর পরিচিতির এই আড়াল অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। যাঁকে তোষামোদে টলানো যায় না, অনুরোধের ঢেঁকি গেলানো সম্ভব হয় না, সস্তা প্রচারের মোহ টানে না, এসবে তিনি বিচলিত হবেন না সেটাই স্বাভাবিক। নিষ্ঠা, একাগ্রতা, সততা ও দায়িত্বশীলতার সাথে যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান করেন, গবেষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন, অভিসন্দর্ভ তদারকির কাজ সম্পন্ন করেন, সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনায় শ্রম দিয়ে আনন্দ খুঁজে পান, তিনি প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব মেলানোর মতো অকাজে সময় ব্যয় করতে পারেন না। 

২০১৬ সালের ২৬ নভেম্বর আমার বর্তমান কর্মস্থল সরকারি ব্রজলাল কলেজে একটি বিশেষ বক্তৃতার জন্য তিনি এসেছিলেন। সাধারণত বাইরের আহ্বানকে এড়িয়ে চললেও আমার আবদার ফেলতে পারেন নি। তিনি এসেছিলেন এবং রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে দীর্ঘ দেড়ঘণ্টা বক্তৃতা করেছিলেন। তাঁর অননুকরণীয় বাচনভঙ্গি, সমৃদ্ধ তথ্যের উপস্থাপন, ক্ষুরধার বিশ্লেষণ, যুক্তির প্রয়োগ এবং শ্রোতাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখার বিরল বৈশিষ্ট্যের খোঁজ সেদিন উপস্থিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পেয়েছিলেন। অচিরেই এই প্রতিষ্ঠানে আবার তাঁর আগমনকে স্বাগত জানানোর উপলক্ষ তৈরি হচ্ছে। এই মনীষীর সান্নিধ্য আবার আমাদের প্রাণিত করবে।

প্রশংসার অতিরঞ্জনে তাঁকে ভাসানোর অপচেষ্টায় এই লেখনী নয়, বরং খানিকটা মুগ্ধতা ও খানিকটা কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুযোগ কাজে লাগানোর প্রচেষ্টা। আমার দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থের পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করে তাঁর হাতে দিয়ে মন্তব্য করার জন্য বলেছিলাম। ভেবেছিলাম অনেকের মতো দীর্ঘদিন ফেলে রেখে বারংবার তাগিদের মুখে একদিন না পড়েই বলবেন, ভালো। কিন্তু এবারও আমাকে অবাক করে দিয়ে গল্পগুলো পড়ে বলেছিলেন, ‘চোখ গল্পটাকে আমার একটু অন্যরকম মনে হয়েছে। এই সংকলনের নাম ‘চোখ’ রাখ।’ আমি সানন্দে রাজি হয়েছিলাম। প্রকাশক পাওয়াটা সমস্যা জেনে তিনি ‘ঐতিহ্য’ থেকে বইটি প্রকাশের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এরপর নিজ উদ্যোগে সমালোচনা লিখিয়ে ‘উলুখাগড়া’য় ছেপেছিলেন। আমার বেলায় সত্যিকারের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। অন্যের দায় কাঁধে নেবার এই স্বভাবসুলভ উদারতা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করে রাখি যে ‘চোখ’ গল্পটির ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সময়ে আরটিভি থেকে একটি নাটক নির্মিত হয়েছিল এবং ২০১৩ সালে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক হিসেবে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার লাভ করেছিল। তখন উপলব্ধি করেছিলাম, কেন ‘চোখ’ গল্পটাকে তাঁর একটু অন্যরকম মনে হয়েছিল। তাঁর যে জহুরির চোখ! তাঁরই নির্দেশে ফ্রেন্ডস বুক কর্নার থেকে প্রকাশের জন্য টনি মরিসনের উপন্যাস ‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’ এবং ফ্রান্সিস বেকনের প্রবন্ধাবলী অনুবাদ করেছিলাম। তিনি নিজে প্রুফ দেখার তদারকি করেছিলেন এবং প্রচ্ছদ নির্বাচনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছিলেন। প্রতিটি গ্রন্থের ক্ষেত্রেই তাঁর নিজস্ব রুচির স্বাক্ষর ছিল। কোনো প্রকাশনাকে সবদিক দিয়ে নিখুঁত করার শ্রম স্বীকার করার নিষ্ঠা  তাঁর মতো আর কাউকে দেখিনি।

গ্রন্থ সম্পাদনার ক্ষেত্রে তিনি যে নিজস্ব একটি অনতিক্রম্য মান দাঁড় করিয়েছেন তার প্রমাণ আরেকবার রাখলেন ঐতিহ্য থেকে প্রকাশিত রবীন্দ্র-রচনাবলির ক্ষেত্রে। রবীন্দ্রনাথের জীবদ্দশাতে ১৯৩৯ সালে বিশ্বভারতী থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর রচনাবলি। দীর্ঘকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকূলে সংরক্ষিত প্রকাশনাস্বত্ব উঠে যাওয়ার পর কলকাতা ও ঢাকা থেকে বিভিন্ন সময়ে রবীন্দ্র-রচনাবলি প্রকাশিত হলেও সৈয়দ আকরম হোসেন সম্পাদিত ঐতিহ্য কর্তৃক ৩০ খণ্ডে প্রকাশিত রবীন্দ্র-রচনাবলি সবদিক দিয়েই বিশেষত্বের দাবি রাখে। এ রচনাবলিতে এমন সব লেখা অন্তর্ভূক্ত হয়েছে যা বিশ্বভারতীর সংকলনে নেই। সম্পাদকের ‘নিবেদনে’ তিনি জানাচ্ছেন, ‘বিশ্বভারতী সংস্করণ ক্রমশ খণ্ডে খণ্ডে প্রকাশিত হওয়ায় রবীন্দ্রনাথের রচনাকাল বা প্রকাশকালের পরম্পরা অনিবার্যভাবেই রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ফলে রবীন্দ্রপ্রতিভার বিষয়বৈভব, রূপবৈচিত্র্য, দর্শন এবং দৃষ্টি-সৃষ্টির ক্রমবিকাশ বা রূপান্তর নির্ণয় অসম্পূর্ণ থেকে যায়; কখনো কখনো তা আকিস্মক বলেও প্রতীয়মান হয়। ... উল্লেখিত বক্তব্য ও পরিপ্রেক্ষিত স্মরণে রেখেই রবীন্দ্রনাথের প্রাপ্ত সমগ্র বাংলা রচনা, প্রকাশক্রম অনুসারে ত্রিশ খণ্ডে নতুনভাবে বিন্যাস করা গেল।’

এ এক সাহসী পদক্ষেপ ছিল। প্রচলিত বিন্যাস ভেঙে কালানুক্রমিক সূচিতে রবীন্দ্র-রচনাবলি সাজানোর সিদ্ধান্ত যেমন তাঁর প্রাজ্ঞ চিন্তার ফসল, তেমনি এই কাজের ব্যাপক পরিশ্রমের দায় কাঁধে নেয়াও সাহসিকতার পরিচয় যা তিনি দেখিয়েছেন। আরো সংযোজন করেছেন টীকাভাষ্য। এই প্রথম রবীন্দ্রনাথের সমগ্র চিঠিপত্র ‘ছিন্নপত্র’ (শ্রীশচন্দ্র মজুমদারকে লিখিত ৮টি পত্র), ছিন্নপত্রসমূহের পূর্ণতর পাঠ ‘ছিন্নপত্রাবলী’ (ইন্দিরা দেবীকে লিখিত পত্রাবলীর পূর্ণতর সংস্করণ), ‘চিঠিপত্র (১-১৯ খণ্ড)’, ‘প্রমথনাথ বিশীকে লিখিত পত্র’, ‘ভানুসিংহের পত্রাবলী’ ও ‘পথে ও পথের প্রান্তে’ অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। এছাড়াও অখণ্ড ‘গীতবিতান’, সাহিত্য-ছবি-গান-সুরের দিক বিবেচনায় নিয়ে রবীন্দ্রনাথ অংকিত ‘রূপ-বিরূপে’র দুই শতাধিক রঙ্গীন ও চার শতাধিক সাদাকালো ছবি এই রচনাবলিতে অন্তর্ভূক্ত হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি খণ্ডের কভার উল্টালেই প্রথম পৃষ্ঠায় রবীন্দ্রনাথের ভিন্ন ভিন্ন প্রতিকৃতি; ভিতরের ফ্লাপে আলাদা ছবি; প্রতিটি নাটক, কাব্যনাট্য, গীতিনাট্যের প্রথম প্রকাশের শিরোনামপত্র এবং যাঁদের নামে গ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছে তাঁদের প্রতিকৃতির সংযোজন এই প্রকাশনাকে ভিন্ন মাত্রা দান করেছে, যা একাধারে সৈয়দ আকরম হোসেনের নান্দনিক চেতনা ও সৃষ্টিশীল ভাবনার ফসল। এর মাঝে পরিশ্রমী, প্রাজ্ঞ ও শিল্পবোধসম্পন্ন একজন সাহিত্য-সাধককে খুঁজে পাওয়া যায়। রবীন্দ্রনাথের ৭৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এ বছর বাংলা একাডেমি তাঁকে ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ দিয়ে সম্মাননা জানিয়েছে। এ তাঁর কর্মের স্বীকৃতি। তারপরও কেন যেন মনে হয় তাঁর কর্মের যথেষ্ট মূল্যায়ন ও প্রাপ্য স্বীকৃতি মেলেনি। আরেকটু বেশি মনযোগ তিনি পেতে পারতেন। সেই দায় আমাদের রয়েই যায়। তাঁর ৭৫তম জন্মবার্ষিকীতে দীর্ঘজীবন প্রত্যাশা করি, কারণ জানি যে বেঁচে থেকে অন্ধকারে আলো জ্বালানোর কাজটি তিনি নিজ দায়িত্বেই করবেন।



ঢাকা/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়