ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ওড়িশা উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে ‘ফণি’

এনএ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৫, ১ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওড়িশা উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে ‘ফণি’

রাইজিংবিডি ডেস্ক : মধ্যপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ সামান্য উত্তরপশ্চিম দিক অগ্রসর হয়েছে। এটি এখন ভারতের ওড়িশা উপকূলের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস।

ভারতের পুরী থেকে ৭১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিম এবং অন্ধ্রের বিশাখাপত্তম থেকে ৪৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে রয়েছে ঘর্ণিঝড়টি।

ওই সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়োহাওয়ার আকারে ১৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। শুক্রবার বিকেলে পুরীর দক্ষিণে গোপালপুর ও চাঁদবালির ওপর ১৮৫-২০৫ কিলোমিটার আছড়ে পড়তে পারে ফণি।

তবে ধীর গতিতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অতি প্রবল হয়ে ওঠা এ ঘূর্ণিঝড় গতিপথ পরিবর্তন করলে বদলে যেতে পারে উপকূল অতিক্রম করার সময় ও স্থান। ফণির প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ওড়িশার উপকূলবর্তী অঞ্চলের কোথাও কোথাও সেই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২০০ মিলিমিটার ছাড়াতে পারে।



ফণির গতিপথ বিশ্লেষণ করে জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টার জানিয়েছে, বুধবার পর্যন্ত এ ঝড় অন্ধ্র উপকূলের দিয়ে অগ্রসর হয়ে তারপর উত্তরে বাঁক নিয়ে ওড়িশা উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে।

মঙ্গলবার রাত থেকেই তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের (এক্সট্রিমলি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) আকার নিয়েছে ফণি। ওড়িশার আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ওড়িশা উপকূলবর্তী অঞ্চলে আঘাত হানার পর ঘূর্ণিঝড়টি পশ্চিমবঙ্গের দিকে বাঁক নেবে। পশ্চিমবঙ্গে ঢোকার সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার। এমনকি সেটা ১০০ কিলোমিটারও হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন আবহাওয়বিদরা। সেই সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতেরও সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্যসাগরদ্বীপ-সহ উপকূলবর্তী অঞ্চলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

বুধবার ঢাকা আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক বিজ্ঝপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এটি আরও ঘণীভূত হয়ে উত্তর/উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১৬০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।



এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমূদ্র বন্দরসমূহকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ফণি আশপাশের আকাশ থেকে নিজের কেন্দ্রের দিকে মেঘ টেনে নেওয়ায় বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় গত চার দিন বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে, ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ফরিদপুর, রাজশাহী, ঈশ্বরদী, মোংলা, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ওপর দিয়ে যে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে বুধবার তা কিছুটা কমতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হৃাস ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ মে ২০১৯/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়