ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি’

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৫১, ১৮ আগস্ট ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি’

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী: দীর্ঘ ৭ বছর পর মা-বাবার কোলে ফিরে আবেগাপ্লুত ময়মনসিংহের খাদিজা খাতুন।

২০১২ সালে এক প্রতিবেশী ভাইয়ের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়েছিলেন খাদিজা। এরপর ভারতের মালদহে সরকারি এক সেফহোমে ঠাঁই হয় তার। দীর্ঘ সময় তাকে এই সেফহোমেই কাটাতে হয়েছে।

গত বছরের ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে এসে রাজশাহীর মানবাধিকার সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র শেল্টার হোমে আশ্রয় নেন। সেখানে খাদিজা একবছর ৪ মাস কাটান। শনিবার এসিডি’র মাধ্যমেই মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে খাদিজা খাতুন এখন আত্মহারা।

খাদিজা বলেন, ‘দীর্ঘ ৭ বছর পর মায়ের মায়াভরা মুখ দেখতে পেয়ে মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি। কোনদিন ভাবতেও পারিনি বাবা-মাকে ফিরে পাব। পরিবারকে ফিরে পেয়ে এতো খুশি হয়েছি যা কাউকেই বুঝাতে পারবো না। আমি এসিডি’র প্রতি চির কৃতজ্ঞ। পরিবারকে ফিরিয়ে দেয়ার ঋণ আমি কোনোদিন শোধ করতে পারবো না।’

খাদিজার বাবার নাম আবুল কাশেম ফকির। আর মা আনোয়ারা বেগম। এসিডি’র অফিসে মা আনোয়ারা বেগম জানান, তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ। তবে দীর্ঘদিন যাবৎ ঢাকার গুলশান-২ এর নূরের চালা এলাকায় বসবাস করেন। ২০১২ সালে খাদিজা যখন নিখোঁজ হন তখন সে মাদ্রাসায় পড়ছিল। পড়ালেখার পাশাপাশি পাশের বাসার ধনী এক ব্যক্তির সন্তানকে দেখাশোনার কাজ করতো খাদিজা। একদিন সেই বাসা থেকেই নিখোঁজ হয় খাদিজা। পরে জানতে পারেন, প্রতিবেশি এক লোকের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়ে গেছে। তারপর একসময় আনোয়ারা মেয়েকে পাওয়ার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলেন।

আনোয়ারা বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে এসিডি’র মাধ্যমে হঠাৎ মেয়ের খোঁজ পাই। তখন থেকেই মেয়ের সাথে মোবাইলে কথা কই। বুঝতে পারি এইটা আমারই খাদিজা। অবশেষে গুলশান থেকে মেয়েকে নিতে রাজশাহী যাই। শনিবার সকালে এসিডি অফিসে মেয়েকে পাই। মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি।’

এসিডি’র শেল্টার হোম ম্যানেজার পুষ্প রাণী বিশ্বাস বলেন, ‘২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থানার মাধ্যমে আমাদের শেল্টারহোমে আসে খাদিজা। এখানে আশার পর থেকেই খাদিজা পরিবারের কাছে ফিরে যেতে চেয়েছিল। আমরা তার পরিবারের খোঁজ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমরা পরিবারের খোঁজ পেয়ে আনুষ্ঠানিকতা শেষে শনিবার দুপুরে খাদিজাকে মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করেছি।’


রাইজিংবিডি/রাজশাহী/১৮ আগস্ট ২০১৯/তানজিমুল হক/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়