আবরার হত্যার যে আসামিকে চেনেই না গ্রামবাসী
জয়পুরহাট সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার অন্যতম আসামি জয়পুরহাট সদর উপজেলার কড়ই উত্তর পাড়ার হাফিজুর রহমানের ছেলে নাজমুস সাদাতকে চেনেই না গ্রামবাসী।
সাদাতের জন্মও হয়নি এখানে। তবে বাবা-মা’র সাথে গ্রামে এসেছেন। তার বাবা-মা থাকেন রাজশাহীতে। বাবা রাজশাহীর হাজী মহসীন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।
জানা গেছে, ছোট বেলা থেকেই নাজমুস সাদাত প্রচন্ড মেধাবী। ৫ম ও ৮ম শ্রেণিতে বৃত্তি, ২০১৫ সালে রাজশাহী গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাইস্কুল থেকে গোল্ডেন প্লাস ও রাজশাহী বোর্ডে ৩য় স্থান অর্জন করেন। সবশেষ ২০১৭ সালে রাজশাহী কলেজে থেকে এইচএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ এবং রাজশাহী বোর্ডে ৪র্থ স্থান অর্জন করে পরিবারসহ স্থানীয়দের অবাক করে দেন। এরপর ঢাবি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, রুয়েট কুয়েট এ ভর্তি পরীক্ষায় সুযোগ পেলেও শেষ পর্যন্ত বুয়েটকেই বেছে নেন তিনি।
দাদা মওলানা আছির উদ্দিন স্থানীয় কড়ই নুরুল হুদা কামিল মাদ্রাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। দাদাসহ সাদাত এর দুই চাচা গ্রামে থাকেন। মেঝ চাচা আমিনুল ইসলাম ক্ষেতলাল উপজেলার হোপপীরহাট মাদ্রাসার শিক্ষক এবং ছোট চাচা ওবায়দুর রহমান কমিউনিটি ক্লিনিকে চাকরি করেন। বিত্তশালী পরিবারের সন্তান সাদাত প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ১৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
কড়ই নুরুল হুদা কামিল মাদ্রাসার ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক আব্দুল মতিন জানান, সাদাত এর বাবা হাফিজুর রহমান সম্পর্কে তার আপন চাচাতো ভাই। হাফিজুর রাজশাহীতে সরকারি স্কুলের শিক্ষকতা করেন। এর আগে তিনি জয়পুরহাট রামদেও বাজলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। চাকরির কারণে হাফিজুর প্রথমে জয়পুরহাট শহরে এবং বর্তমানে রাজশাহীতে বসাবাস করছেন। গ্রামে সবাই তাকে চিনলেও তার ছেলে সাদাতকে সেভাবে কেউ চেনে না। সাদাত তার দাদার বাড়ি খুব কম আসত। গ্রামের কেউ কেউ তাকে চিনত সজিব নামে। গ্রেপ্তার হওয়ার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর দেখে তারা আবরার হত্যাকান্ডের সাথে সাদাতের জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে পারছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রতিবেশি জানান,সাদাত এর বাবা হাফিজুর রহমান অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সময় শিবিরের রাজনীতি করতেন। পরবর্তীতে দলে সক্রিয় না হলেও কথাবার্তায় তিনি সবসময় আওয়ামী লীগের সমালোচনা করতেন। এলাকায় তাদের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। জয়পুরহাট জেলার মধ্যে কড়ই গ্রাম জামায়াত-শিবিরের জন্য উর্বর এলাকা বলেও তারা জানান।
প্রসঙ্গত: বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নাজমুস সাদাত বিরামপুরের কাটলা সীমান্ত ব্যবহার করে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) ভোররাত সাড়ে ৩টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা শাখার একটি দল বিরামপুর থানার সহযোগিতায় সাদাতকে তাদের আত্মীয় রফিকুলের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।
জয়পুরহাট/ মোঃ শামীম কাদির/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন