ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

রাজশাহী জেলা আ’লীগের সম্মেলন ৪ ডিসেম্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৬, ৮ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজশাহী জেলা আ’লীগের সম্মেলন ৪ ডিসেম্বর

আগামী ৪ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার ঢাকায় দলের প্রধান কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ডা. দীপু মনি, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সম্প্রতি এই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। দলীয় একটি সভায় সাধারণ সম্পাদক তার সভাপতিকে ‘রাজাকারের সন্তান’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বক্তব্য দেন।

এরপর গত ১৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের রাজশাহী বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত এ সভায় কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন। সেখানে বিভাগের সব জেলার সভাপতি ও সম্পাদক বক্তব্য দিলেও কোন্দলের কারণে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বক্তব্য দিতে দেয়া হয়নি। সেই দিন জেলার এ দুই নেতাকে কেন্দ্রে তলব করে যান কেন্দ্রীয় নেতারা।

এরপর পূর্ব নির্ধারিত দিন শুক্রবার সকালে এই দুই নেতা কেন্দ্রের কাঠগড়ায় উপস্থিত হন। সেখানে নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর আগামী ৪ ডিসেম্বর রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন ঠিক করে দেয়া হয়।

সভায় উপস্থিত একটি সূত্র জানান, দলীয় নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য কেন্দ্রীয় নেতারা রাজশাহীর সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীকে ভর্ৎসনা করেন। আর সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদকে বলেন, প্রকাশ্যে রাজাকারের সন্তান বলাটা ঠিক হয়নি। এটা দলীয় ফোরামে উত্থাপন করা যেত।

এর প্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান বলেছেন, তিনি যে কথা বলেছেন তার পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ আছে। সম্প্রতি বিএনপি-ফ্রিডম পার্টি হয়ে ওমর ফারুক চৌধুরী আওয়ামী লীগে এসে এমপি হয়েছেন এমন খবর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহীতে তোলপাড় সৃষ্টি হলে জেলার ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা বিবৃতি দিয়ে বলেছেন ওমর ফারুক চৌধুরীর বাবা একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন।

দুই নেতার এসব কথা শুনে কেন্দ্রীয় নেতারা সম্মেলনের দিন ঠিক করে দেন। এই সম্মেলনের জন্য রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি সম্মেলন আয়োজনের ব্যবস্থা করবেন। এর মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন হবে।

সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে আমরা প্রতিনিধি সম্মেলনে গিয়েছিলাম। তারপরও পত্রপত্রিকা রাজশাহীর খারাপ খবরে ভরে গেল। এটি আমাদের জন্য দুঃখজনক।’’ সম্মেলন সামনে রেখে সব তিক্ততার অবসান ঘটবে বলে তিনি আশা করেন।

তিনি বলেন, ‘‘কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি বন্ধ করতে হবে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে; কিন্তু সেই প্রতিযোগিতা হবে সুস্থ। অসুস্থ প্রতিযোগিতা বরদাশত করা হবে না। আমি এটা নেত্রীর পক্ষ থেকে পরিষ্কার সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই।’’

সভার শুরুতে সভাপতি মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগের বড় শক্তি জনগণ ও বঙ্গবন্ধু। সেই উদ্দেশ্য নিয়ে কাউন্সিল করা হবে। এতে করে সমস্যা থাকলে তারও সমাধানে করা হবে। এ জন্য জাতীয় সম্মেলনের আগে শেখ হাসিনার নিদের্শনায় সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন করা হচ্ছে।

২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন হয়। ২০১৫ সালের ২৭ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর ৬ ডিসেম্বর প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সভাপতি-সম্পাদকের দ্বন্দ্বে ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবরের পর জেলা আওয়ামী লীগে সভা হয়নি।

সম্প্রতি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ৬৬ নেতার মধ্যে সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ছাড়াই ৪১ জন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার কাছে সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনের এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ তুলে ধরা হয়। দাবি করেন বহিষ্কারেরও। এরই মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন ঠিক হলো।


রাজশাহী/তানজিমুল হক/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়