ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সিলেটে রবীন্দ্রনাথ স্মরণ উৎসবের পর্দা নামলো

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৩৯, ৮ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সিলেটে রবীন্দ্রনাথ স্মরণ উৎসবের পর্দা নামলো

শব্দ-ছন্দ, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী আর আলোচনা সভাসহ বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো চারদিন ব্যাপী ‘সিলেটে রবীন্দ্রনাথ: শতবার্ষিকী স্মরণোৎসব’। সিলেটে কবিগুরুর আগমনের শতবর্ষ স্মরণীয় করে রাখতেই এ আয়োজন করা হয়েছিল। চারদিনে পৃথক পৃথক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কবির সিলেট আগমনের শতবর্ষ স্মরণ করা হয়। উন্মোচন করা হয় কয়েকটি ম্যুরালও।

স্মরনোৎসব উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে শুক্রবার রাতে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে সমাপনী অনুষ্ঠানে কয়েক হাজার রবীন্দ্রপ্রেমীদের সমাগম ঘটেছিলো। সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী সমাপনী বক্তব্য রাখবেন বলে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়।

তবে বিশেষ কারণে ভিডিও কনফারেন্সেও যুক্ত হতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘ব্যস্ততার কারণে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি যুক্ত না হলেও সিলেটবাসীর এমন বর্ণিল আয়োজনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘সমর্থন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন’।

তিনি বলেন, ‘প্রথমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে আসার কথা ছিলো। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে তিনি আসতে পারবেন না বলে জানালেও শুক্রবার যেহেতু ছুটির দিন তাই তিনি ভিডিও কনফারেন্সে এ অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু শুক্রবার ছুটির দিন হলেও কি হবে, ব্যস্ততা এতোটাই বেশি যে তিনি মোটেও সময় বের করতে পারেননি। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন আমি যেন উপস্থিত থাকি এবং সিলেটবাসীকে বলি এ উৎসবে উনার সমর্থন আছে এবং উনি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘শতবছর আগে সিলেটের সকল স¤প্রদায়ের লোক রবীন্দ্রনাথকে বরণ করেছিলেন। তাঁকে বন্দে মাতরম ও আল্লাহু আকবার ধ্বনিতে সিলেটে স্বাগত জানানো হয়। সে সময়ও সিলেটের সম্প্রীতি ছিলো অনন্য। আজ শত বছর পরও যখন সিলেটের সকল শ্রেণি পেশার কবি রবীন্দ্রনাথের সিলেট আগমনের শতবর্ষ স্মরণ করছে তখন আমার গর্বে বুক ভরে যায়।’  

ড. এ কে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, আজ থেকে ৩ বছর নয় মাস আগে এই সিলেটে বেঙ্গল সাংস্কৃতিক উৎসবে প্রায় ৬০ হাজার সংস্কৃতিপ্রেমী অনুষ্ঠান উপভোগ করেছিলো। তা থেকে বুঝা যায় সিলেটিরা কতটা সংস্কৃতিপ্রেমী। সিলেটের সকল মানুষের সহযোগিতায় আগামীতে সিলেটে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষ পালন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি আগামীতে আপনাদের সকলের সহযোগিতায় সিলেটের মাটিতে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ পালন করা হবে, স্বাধীনতার ৫০ বছর উদযাপন করা হবে।’

সমাপনী দিনে সন্ধ্যার পর আলোচনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন স্মরণোৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ইনাম আহমদ চৌধুরী, ভারতের গৌহাটি বিশ্ব বিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন উষা রঞ্জন ভট্টাচার্য, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী। অনুষ্ঠান যৌথভাবে উপস্থাপনা করেন প্রফেসর শামীমা চৌধুরী ও নন্দিতা দত্ত।

সমাপনী দিনে আয়োজন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠানমালার। এর মধ্যে সম্মেলক আবৃত্তি ও সংগীত, আলোচনা পর্ব, দলীয় নৃত্য, আসাদুজ্জামান ন‚র ও মেধা বন্দোপাধ্যায়ের একক আবৃত্তি এবং ভারতের পদ্মশ্রী প‚র্ণদাস বাউল, বাংলাদেশেরর রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, ভারতের অগ্নিভ বন্দোপাধ্যায়, বাংলাদেশের লাইসা আহমদ লিসা, ড. অনুপম কুমার পাল ও অসীম দত্তসহ অন্যান্য শিল্পীর একক সঙ্গীত পরিবেশনা ছিল।

প্রসঙ্গত,  ১৯১৯ সালের ৫ নভেম্বর সিলেট আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তার সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও পুত্রবধু প্রতিমাদেবী। চারদিন অবস্থানও করেন এ শহরে। যোগ দেন একাধিক অনুষ্ঠানেও। গত ৫ নভেম্বর তার সিলেট আগমনের শতবর্ষপূর্ণ হয়। এ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতেই ওইদিন থেকে চারদিনের স্মরণোৎসব আয়োজন করা হয়। চারদিনেই পৃথক একাধিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও ভারতের রবীন্দ্র গবেষক এবং খ্যাতিমান শিল্পীরা অংশ নেন।
 

সিলেট/আব্দুল্লাহ আল নোমান/নাসিম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়