আত্মহত্যার আগে সাথীর চিঠি
রাঙ্গাবালী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
‘আজ আমি তোমার কাছ থেকে অনেক দূরে চলে গেলাম। জানি না আমার কথা তোমার মনে পড়বে নাকি। আমার ভালোবাসা তোমাকে আমার কথা মনে করাবে। আমার স্মৃতিগুলো তোমার চোখের উপরে ভাসবে। জানো তারমিন কোনো দিন আমি তোমাকে ভুল বুঝি নাই। কারণ, আমি তোমায় ভালোবাসি। কোনো দিন যদি কোনো অপরাধ করি তাহলে ক্ষমা করো। ’
এভাবেই বান্ধবী তারমিনের কাছে চিঠি লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় স্কুল পড়ুয়া ছাত্রী সাথী আক্তার (১২) আত্মহত্যা করেছেন। রোববার দুপুরে উপজেলার রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের পূর্ব নেতা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সাথী ওই গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে এবং সালেহা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। ওই দিন দুপুরে সাথীর লাশ ও আত্মহত্যার আগে লিখে যাওয়া চিঠি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আত্মহত্যার আগে বান্ধবী তারমিনের কাছে লিখে যাওয়া ওই চিঠিতে সাথী আরও লিখেছে, ‘আমার জন্য যদি তোমার মনে কোন কষ্ট পেয়ে থাকো তাহলে আমায় ভুলে যেও না। জানো তোমাকে দেবার মত আমি কিছু রেখে যাইনি, শুধু রেখে গেছি আমার স্মৃতি আর এই চিঠি আমার জন্য দোয়া করবে, যেন অন্য কোন বন্ধুকে পেয়ে এই সাথীর নাম তোমার মন থেকে মুছে দিও না। আমি জানি সুবু আমায় অনেক ভালবাসে। তবুও তুমি যখন বলতে সুবু তোকে ভালবাসে না, আমি তোমার সাথে সাথে বলতাম। কিন্তু এই সাথি মন থেকে কোনদিন বলিনি যে ও আমায় ভালোবাসে না।
অভিমান করে বলছি। তুমি যাতে খুশি হও। তাই বলছি। আমি তোমার চোখের সামনে থেকে চলে গেছি। তাতে কি তোমার মনের মাঝে আছি। আমি তোমার সাথে দেখা করতে আসবো। সুবুর জন্য একটা চিঠি লিখছি। আমার তথ্য বইয়ের মধ্যে। প্লিজ ওকে দেবে। প্লিজ।
ইতি-
তোমার বান্ধবী সাথী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুর ১ টায় পরিবারের অগোচরে নিজ ঘরের মধ্যে গায়ের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে সাথী আত্মহত্যা করেন।
পরে পরিবারের লোকজন সাথীর লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে আহাজারি শুরু করলে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ওসি আলী আহম্মেদ বলেন, ‘ময়না তদন্তের জন্য সাথীর লাশটি উদ্ধার করেছি। এসময় ঘটনাস্থল থেকে চিরকুট পাওয়া গেছে। আত্মহত্যার কারণ উদঘাটনের জন্য তদন্ত চলছে।’
রাঙ্গাবালী/ওমর সানি/হাকিম মাহি
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন