কাঁকড়ার নতুন প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি (এফএমআরটি) ডিসিপ্লিনের গবেষণায় আরো একটি সাফল্য এসেছে। এই গবেষণায় কাঁকড়ার নতুন প্রজনন মৌসুম চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি (এফএমআরটি) ডিসিপ্লিনের উদ্যোগে ‘কনজারভেশন অ্যান্ড প্রোমোশন অফ মাড ক্রাব: স্টাডি ফাইন্ডিংস অন সেক্টর গ্রোথ অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পটেনশিয়ালিটি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা টিমের গবেষষণালব্ধ ফল উপস্থাপন করে বলা হয়, মাঠ পর্যায়ে এক বছরেরও বেশি সময় সমীক্ষা ও গবেষণায় কাঁকড়ার বর্তমান প্রচলিত ও অনুমোদিত প্রজননকাল জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে তা মার্চ মাসই সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এ বিষয়টি নিয়ে দেশের সমগ্র উপকূল ও প্রয়োজনে আরো কিছু এলাকায় বৃহত্তর পরিসরে গবেষণা চালালে নতুন চিহ্নিত মার্চ মাসের সময়কে জাতীয়ভাবে নির্ধারণ, নিশ্চিতকরণ ও তা কার্যকর করা সম্ভব হবে। এছাড়া প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় কেবল উপকূল থেকে পোনা আহরণের পরিবর্তে হ্যাচারিতে কাঁকড়ার পোনা বা বাচ্চা উৎপাদনের তাগিদ দেয়া হয়।
সেমিনারে হ্যাচারির কাঁকড়ার ফিড এবং অন্যান্য ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ নিয়েও আলোচনা করা হয়। প্রশ্নোত্তোর পর্বে বেশকিছু সুপারিশও করা হয়।
সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুর রউফ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেয়ার বাংলাদেশের অ্যাসিসট্যান্ট কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রাবোধ দেবকোটা, খুলনা পাইকগাছাস্থ বিএফআরআই এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. সৈয়দ লুৎফর রহমান, সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্টের ডিপিডি সরোজ কুমার মিস্ত্রী, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ডিএফও মো. মোদিনুল ইসলাম, সুইজারল্যান্ড দূতাবাসের এসডিসি প্রকল্পের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার সোহেল ইবনে আলী।
সেমিনারে ৩টি টেকনিক্যাল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রকল্পের প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. গোলাম সরোয়ার, একই ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ও গবেষণা প্রকল্পের কো-ইনভেস্টিগেটর ড. মোহাম্মদ ইউসুফ আলী এবং কাঁকড়া উৎপাদন ও বিপণনের সম্ভাবনা বিষয়ে গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করেন সমষ্টি প্রজেক্টের মার্কেট ভেভেলপমেন্ট স্পেশালিষ্ট মোহাম্মদ আবুল হোসেন।
সেমিনারে সমষ্টি প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন কেয়ার বাংলাদেশের সিনিয়র টিম লিডার মো. গিয়াস উদ্দিন তালুকদার এবং কেয়ার বাংলাদেশের কার্যক্রম সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন কেয়ার বাংলাদেশের এক্সট্রিম রুরাল প্রোভার্টি প্রোগ্রামের পরিচালক আমানুর রহমান।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মোসা. মুসলিমা খাতুন। সঞ্চালনা করেন এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদুল ইসলাম ও সুস্মিতা কর্মকার।
পরে সেমিনারে আগত অতিথি ও গবেষক, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের সাথে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা সবসময়ই এ ধরনের গবেষণা, যৌথ কার্যক্রম ও সেমিনার আয়োজনকে গুরুত্ব দিয়ে থাকি। গবেষণালব্ধ ফলাফল যাতে অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক হয় এবং বিশেষ করে তা দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে প্রান্তিক মানুষের কাজে সে বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য তিনি আহবান জানান।
খুলনা/মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/সাইফ/নাসিম
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন