ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

ঘুষ দিতেই মিলল সংযোগ

জেলা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৭:১২, ১৩ নভেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঘুষ দিতেই মিলল সংযোগ

ফাইল ফটো

র্দীঘ আড়াই বছর ধরে বাড়িতে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগের জন্য ঘুরছেন তিনি। একাধিকবার জেনারেল ম্যানেজারসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে ধর্ণা দিয়েছেন। সংযোগ মেলেনি।

অবশেষে দালাল চক্রের সদস্য ইলেক্ট্রিশিয়ান কবির মোল্লার দাবিকৃত ঘুষ দিতে রাজি হন। ঘুষ দিলেন। পরের দিনই মিলল কাঙ্খিত বিদ‌্যুত সংযোগ।

পটুয়াখালীতে এভাবেই পল্লী বিদ‌্যুতের সংযোগ দেয়া নিয়ে চলছে গ্রাহক ভোগান্তি।

ভুক্তভোগী ওই গ্রাহককে সংযোগ দেয়ার জন‌্য ঘুষের কথা প্রকাশ না করতে শর্ত দেয়া হয়েছিল। তবে বিষয়টি প্রকাশ‌্যে চলে আসায় এঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১ জুলাই পটুয়াখালী সদর উপজেলার খলিশাখালীর বাসিন্দা মাসুদ আলমের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করা হয়। শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিৎ করার লক্ষ্যে ওই এলাকার প্রতিঘরে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য খুঁটি বসানো হয়। কিন্তু আবেদনকারী মাসুদ আলম দালাল চক্রের সদস্য সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলমকে টাকা না দেয়ায় তার বাড়ি বাদ দিয়ে খুঁটি বসানোসহ প্রয়োজনীয় কাজ করা হয়।

এ ঘটনায় দৈনিক যুগান্তরে একটি খবর প্রকাশিত হলে আবেদনকারীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দেয়া হয়ে। পরে ২০১৮ সালে আবেদনকারীর ভাই মিজানুর রহমান ও জসিম উদ্দিন স্থানীয় এক সাংবাদিককে ধরে কোনোভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার পরিকল্পনা করা হয়।

এঘটনায় দালাল চক্রের সদস্যরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, টাকা না দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে না। স্থানীয়ভাবে হুমকী ধামকি দেয়া হয়েছিল। শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ সেবা নিশ্চিৎ করার লক্ষ্যে অভিযোগকারীর বাড়ি ছাড়া ওই এলাকার প্রতিঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়।

এরপর দফায় দফায় পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নির্বাহী প্রকৌশলী সেলিম মিয়া, জেনারেল ম্যানেজার মনোহর কুমার বিশ্বাস এবং সিনিয়র অ‌্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পুরনজিৎ হালদারসহ পল্লী বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে ধর্ণা ধরলেও সংযোগ পাইনি ওই ভুক্তভোগী পরিবার।

চলতি বছর ওই কাজে টেন্ডার আহ্বান করে এক ঠিকাদার কাজ পেলেও সংযোগ পায়নি ওই পরিবার। সম্প্রতি ওই চক্রের সদস্য ইলেক্ট্রিশিয়ান কবির মোল্লাকে সাত হাজার টাকা দেয়ার পর বুধবার সকালে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কবির মোল্লা বলেন, ‘ওই ব্যক্তি অনেকদিন ধরে ঘুরেও লাইন পাননি। আমি সাত হাজার টাকা নিয়ে কাজ করে দিয়েছি। ’

ওই কাজের ঠিাকাদার মিথিলা এন্টার প্রাইজের মালিক আবুর বকর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি এ ঘটনা জানিনা। স্থানীয় একটি দালাল চক্র এ নিয়ে কাজ করছে। যাদের কাছে আমরা জিম্মি। ’

এ প্রসঙ্গে অ‌্যাসিস্ট‌্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পুরনজিৎ হালদার এ প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি নিজেই এক ব্যক্তির জন্য সুপারিশ করছি। তবে এই দালাল চক্রটি তার কাছ থেকেও টাকা নিয়েছে। এ ঘটনায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কেউ জড়িত নয়।’


পটুয়াখালী/বিলাস দাস/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়