সিনথিয়া পেল হুইল চেয়ার
কালীগঞ্জ সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
দশ বছরের সিনথিয়া আক্তার শারীরিক প্রতিবন্ধী। গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলাধীন বক্তারপুর ইউনিয়নের মোহানী গ্রামের টিউবওয়েল শ্রমিক শিপন ব্যাপারীর মেয়ে।
পড়ছে ওই ইউনিয়নের মোহানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩য় শ্রেণিতে। মেয়ে সিনথিয়ার জন্য স্বামীর কাছে একটি হুইল চেয়ারের দাবি ছিল মায়ের। কিন্তু অভাব অনটনের সংসার চালাতে যেখানে বাবা শিপন ব্যাপারী হিমসিম খাচ্ছেন, সেখানে মেয়ের জন্য একটি হুইল চেয়ার কেনার স্বপ্ন ছিল আকাশ কুসুম ভাবনা।
বিষয়টি এক কান দুই কান করে চলে কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সাদ্দাম হোসেনের কানে। তিনি পরিবারকে আশ্বস্ত করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শিবলী সাদিক স্যারকে বলে একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা করে দিবেন। পরে বিষয়টি ইউএনও’কে জানান ওই ছাত্রলীগ নেতা। ইউএনও তাকে আশ্বস্ত করেন সিনথিয়া হুইল চেয়ারেই চলবে।
দিন পনেরো পরে সেই ছাত্রলীগ নেতার মাধ্যমে খবর গেল সিনথিয়ার বাড়িতে। যেতে হবে ইউএনও অফিসে। কেন? কি কারণে তা বলা হলো না। সিনথিয়ার মা খাদিজা বেগম তার কোলের শিশুসহ শারীরিক প্রতিবন্ধী সিনথিয়াকে নিয়ে চলে গেলেন ইউএনও অফিসে।
ইউএনও তার অফিস সহকারীকে ডেকে, নিয়ে আসতে বললেন সিনথিয়ার হুইল চেয়ারটি। আনা হলো হুইল চেয়ার। আর তাতে বসানো হলো সিনথিয়াকে। হুইল চেয়ার পেয়ে সিনথিয়ার কালো মুখখানা ভেসে গেল হাসির বন্যায়। সিনথিয়ার আনন্দ আর হাসিতে উপস্থিত অনেকের চোখে তখন আনন্দ অশ্রু।
সিনথিয়ার মা খাদিজা বেগম বলেন, একটি হুইল চেয়ারের জন্য কষ্ট করেছি দীর্ঘদিন। যারা আমার শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ের সহযোগিতায় এগিয়ে আসলেন তাদের সবাইকে আমার দরিদ্র পরিবারের পক্ষ থেকে অনেক অনেক দোয়া।
তিনি আরো বলেন, হুইল চেয়ার পাওয়ার আগে ভয়ে ছিলাম কেন আমাদের ইউএনও অফিসে ডাকল? কিন্তু পরে বুঝলাম ইউএনও শিবলী সাদিক স্যার সত্যি এক মানবিক মানুষ।
এ ব্যাপারে ইউএনও শিবলী সাদিক বলেন, দেখেন আমরা কত টাকা, কত পয়সা অযথা কাজে নষ্ট করি। সেই নষ্ট করা টাকা-পয়সার কিছু সঞ্চয় যদি অসহায় মানুষের কাজে লাগাই তাহলে অল্পতেই ওই মানুষগুলোর মুখে হাসি দেখা সম্ভব।
কালীগঞ্জ/রফিক/বুলাকী
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন