জয়পুরহাটে নবান্ন উৎসবে মাছের মেলা
জয়পুরহাট সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
থরে থরে সাজানো রুই, কাতলা, চিতল, সিলভার কার্প, ব্লাডকার্প বিগ্রেড, বোয়ালসহ হরেক রকমের মাছ। সারি সারি দোকান। চলছে হাঁকডাক, দরদাম। এক কেজি থেকে শুরু করে ২০ কেজি ওজনের মাছ। লোকজনও উৎসাহ নিয়ে দেখছেন। কেউ কেউ কিনছেন।
সোমবার দিনব্যাপি জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে নবান্ন উৎসব ঘিরে মাছের মেলা বসে।
নবান্ন উৎসবে প্রতি বছর এখানে মাছের মেলা বসে। মেলায় অংশ নেয় উপজেলার মাত্রাই, হাতিয়র, খোশালিপুর, হাটশর, হারুঞ্জ, পুনট, বেগুনগ্রাম, পাঁচগ্রামসহ ২৫ থেকে ৩০ গ্রামের মানুষ। এই উৎসবে প্রতি বাড়িতে মেয়ে-জামাইসহ স্বজনদের আগে থেকে দাওয়াত দেয়া হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ মেলায় আসে।
মেলায় বিশালাকৃতির একটি মাছ মাথার ওপর তুলে ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন কালাই উপজেলার হাতিয়র গ্রামের মাছ বিক্রেতা গোলাম রব্বানী। তিনি ১৫ কেজি ওজনের সিলভার মাছটির দাম হাঁকেন ১১ হাজার টাকা। ২০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে বিগ্রেড ও সিলভার কার্প মাছ বেশি বিক্রি হয়েছে। রুই ও কাতলা মাছ বিক্রি হয়েছে ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি দরে।
কথা হয় ক্রেতা বেলাল হোসেন, অমিত মন্ডল, মনোয়ার হোসেনসহ কয়েক জনের সঙ্গে। প্রত্যেকে জানান, এবারের মেলায় প্রচুর মাছ উঠেছে কিন্তু দাম অনেকটা বেশি।
মাছ ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন, তাজুল ইসলাম, অনীল কুমার জানান, মাছের মেলায় প্রচুর লোক সমাগম হলেও বেচাকেনা সেই তুলনায় কম। তারপরও যেটুকু বেচাকেনা হয়েছে, সব খরচ বাদে তাতে লাভ টিকবে।
মাছ চাষি মাহমুদ হাসান মেলা সামনে রেখে এক বছর ধরে পুকুরে বড় বড় মাছ বাছাই করে চাষ করেছেন। তাই এবার পাঁচশিরা বাজারের মাছের মেলায় বড় বড় মাছ বিক্রি করতে পারছেন।
কালাই পৌর শহরের হাসপাতাল এলাকা থেকে শিখা রাণী সাহা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাছের মেলায় এসেছেন। প্রতি বছর মেলায় আসেন তিনি। এবার তার সঙ্গে এসেছেন ধামইরহাট থেকে আসা বড় ভাইয়ের স্ত্রী অপর্ণা কর্মকার। তারা দুইজন মিলে দরদাম করে ৬৫০ টাকা কেজি দরে ৪ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের একটি কাতলা কিনেছেন।
তিনি বলেন, মেলায় বহু ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের দেখে ভালো লাগছে। আসলে বাঙালি জীবন থেকে উৎসবগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এ রকম উৎসবে অংশ নিতে পারলে ব্যস্ততম জীবনে কিছুটা প্রশান্তি আসে।
জয়পুরহাট/শামীম কাদির/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন