তিনি দুই প্রতিষ্ঠানের প্রধান, তুলছেন বেতনও

তিনি এক মাদ্রাসার অধ্যক্ষ, আরেক মাদ্রাসার সুপার। দুই প্রতিষ্ঠানের হাজিরা খাতাতেই আছে তার স্বাক্ষর। বেতনও তুলছেন দুই প্রতিষ্ঠান থেকে।

দুই প্রতিষ্ঠানের এই প্রধানের নাম এএইচএম হাবিবুর রহমান। পৃথক দুই ব্যাংক থেকে টানা ৭ মাসের বেতন-ভাতাদি উত্তোলন করেছেন তিনি। অবশ্য একটি প্রতিষ্ঠানের বেতন ফেরত দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

তিনি একটি নাশকতা মামলারও আসামি। ২০১৮ সালের ১১ নবেম্বর মনিরামপুর থানায় এএইচএম হাবিবুরের বিরুদ্ধে নাশকতা মামলা হয়। ওই মামলায় তিনি ৩৫ নম্বর আসামি। মামলায় একবার আটক হন এবং চলতি বছরের ২০ আগস্ট নিজেই আদালতে আত্মসমর্পণ করে ১১ দিন হাজতবাস করেন। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে হাজতবাসের দিনগুলোতে ভুয়া মেডিকেল সার্টিফিকেট দেখিয়ে তিনি ছুটি ভোগ করেছেন।

মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, উত্তোলনকৃত অতিরিক্ত অর্থ চলতি মাসের ৫ তারিখে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। নাশকতা মামলায় হাজতবাসের কথা জানতে চাইলে, এখন কথা বলার সময় নেই বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

যশোর সদর উপজেলার সিরাজসিংগা দাখিল মাদরাসার সুপার থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালের ১৯ নবেম্বর মণিরামপুর উপজেলার টুনিয়াঘরা মহিলা আলিম মাদরাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। এরপরও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে ম্যানেজ করে পূর্বের কর্মস্থলে গোপনে হাজিরা খাতায় নিয়মিত স্বাক্ষর করতেন।

পূর্বের কর্মস্থল যশোর সদর উপজেলায় হওয়ায় রূপালী ব্যাংক যশোর শাখা টি-২১৪১৪২৮ সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর থেকে প্রায় ২ লাখ ১১ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। নতুন কর্মস্থলে অধ্যক্ষ পদের বিপরীতে চলতি বছরের জুলাই মাসের এমপিও’তে (মান্থলি পে অর্ডার) বকেয়াসহ ৩ লাখ ২৪ হাজার ৫৬৪ টাকা রূপালী ব্যাংক মনিরামপুর শাখার টি-৪৭০৬ সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর থেকে উত্তোলন করেন।

পূর্বের কর্মস্থলের সভাপতি আব্দুল লতিফ জানান, অন্যত্রে যোগদানের পর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেয়া ভুল ছিলো। বর্তমান কর্মস্থলের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মোড়ল বলেন, ‘দুই প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা উত্তোলন করলেও পরে তিনি নিয়মানুযায়ী পরিশোধ করেছেন।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘এমন দুর্নীতি হয়ে থাকলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’



যশোর/সাকিরুল কবীর রিটন/টিপু