ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

রংপুর নগরবাসী মেডিকেল বর্জ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:০২, ৮ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রংপুর নগরবাসী মেডিকেল বর্জ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের ক্লিনিক্যাল বর্জ্যের কারণে নগরবাসীর স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে।

সম্প্রতি সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে একটি এনজিও ক্লিনিক্যাল বর্জ্য নষ্ট করার চুক্তি করলেও অধিকাংশ ক্লিনিক মালিক তা মানছে না। তবে সিটি কর্পোরেশন বলছে, যারা ক্লিনিক্যাল বর্জ্য আইন মানছে না তাদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

এই বর্জ্যের কারণে নগরীর মাটি, পানি ও বাতাস দুষিত হচ্ছে। এতে হৃদরোগ, চর্মরোগ, শিশুদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগবালাই বাড়ছে।

সিভিল সার্জন, স্থানীয় ক্লিনিক ও সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, রংপুর নগরীতে একটি সরকারি চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও হাসপাতাল এবং কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল রয়েছে। এছাড়া সিটি কর্পোরেশেনের তথ্য অনুয়ায়ী নগরীতে ২৭৫টি ক্লিনিক ও ডায়াগনেস্টিক সেন্টার রয়েছে। এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার কেজি অর্থাৎ এক টনের বেশি ক্লিনিক্যাল বর্জ্য বের হয়।

এসব বর্জ্য পাঁচ প্রকার। সেগুলো হলো- সংক্রামক, ধারালো, পুনঃচক্রায়নযোগ্য, তরল ও সাধারণ বর্জ্য। এর মধ্যে প্রতিদিন সংক্রামক বর্জ্য বের হয় ৪০০ কেজির বেশি, ধারালো বর্জ্য ৩০০ কেজি, পুনঃচক্রায়নযোগ্য ৩০০ কেজি এবং সাধারণ বর্জ্য বের হয় ৪০০ কেজির মতো। ৫০০ থেকে ৭০০ কেজি তরল বর্জ্য ড্রেন অথবা সেফটি ট্যাংকের মাধ্যমে পানিতে মিশে পরিবেশ দুষণ ঘটাচ্ছে। অন্যান্য বর্জ্য রাস্তার আশপাশে স্তূপ করে ফেলে রাখা হয়।

এসব বর্জ্যের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকারক সংক্রামক বর্জ্য। এই সংক্রামক বর্জ্য অন্যান্য বর্জ্যের সঙ্গে মিশে জনস্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। ফলে নগরীতে আশংকাজনক হারে বাড়ছে রোগবালাই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বর্জ্য দিনের পর দিন খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখা হয়। ফলে মাটি ও বাতাসে মিশছে মানবদেহের ক্ষতিকর পদার্থ।

সম্প্রতি প্রিজম বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থা সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে এসব বর্জ্য পুড়িয়ে কিংবা ডাস্ট করতে চুক্তি করেছে। কিন্তু অধিকাংশ ক্লিনিক মালিকরা এই চুক্তির আওতায় আসছে না।

সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, ৫০ শতাংশের বেশি ক্লিনিককে চুক্তির আওতায় আনা যায়নি। তারা ক্লিনিক্যাল বর্জ্য আইন মানছে না। তবে জেলা সিভিল সার্জন বলছেন, সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে খুব দ্রুত ওই সব ক্লিনিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রংপুর সিভিল সার্জন ডা. হিরণ কুমার জানান, ক্লিনিক মালিকরা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন মানছেন না। যত্রতত্র বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। অচিরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

রংপর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দপ্তরের প্রধান মিজানুর রহমান জানান, চিকিৎসা বর্জ্য বিধিমালা ২০০৮ সম্পর্কে ক্লিনিক মালিকের সঠিক ধারণা নেই। যারা আইন অনুয়ায়ী ক্লিনিক্যাল বর্জ্য ধ্বংস করছেন না,  তাদের নোটিশ দেয়া হয়েছে। খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।



রংপুর/নজরুল মৃধা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়