ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জোছনায় মিলেমিশে একাকার হাজারো মানুষ

বরগুনা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:২১, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জোছনায় মিলেমিশে একাকার হাজারো মানুষ

একদিকে সাগরের সীমাহীন জলরাশি, আরেক দিকে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন। একদিকে দীর্ঘ ঝাউ বন আরেকদিকে তিন তিনটি বিশাল নদীর মোহনা। নদ-নদী আর বন-বনানীর এক অপরূপ সমাহারে ভরা পূর্ণিমায় জল-জোছনায় একাকার হাজারো জোছনাবিলাসী মানুষ।

এই জোছনাপাগল মানুষদের নিয়ে বরগুনার তালতলীতে ‘শুভসন্ধ্যা' সমুদ্র সৈকতে অনুষ্ঠিত হয়েছে উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ জোছনা উৎসব। পঞ্চমবারের মতো এ উৎসবের আয়োজন করে বরগুনা জেলা প্রশাসন। উৎসবে প্রায় অর্ধলক্ষ দর্শনার্থী অংশ নেয়।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বরগুনা নৌবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবের উদ্বোধন করেন বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।

এ সময় তিনি বলেন, ‘পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় বরগুনার নয়নাভিরাম সৌন্দর্যকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে প্রতিবছর এ উৎসবের আয়োজন করা  হয়’।

উৎসবে যোগ দিতে দর্শনার্থীদের নিয়ে বরগুনার আমতলী ও পাথরঘাটা উপজেলা থেকে একযোগে যাত্রা শুরু করে একাধিক লঞ্চ।  বরগুনার খাগদন নদী হয়ে বাইনচটকীর স্নিগ্ধ বনভূমির পাশ দিয়ে কুমীরমারা আর গোড়াপদ্মার নয়নাভিরাম বন-বনানীর কোল ঘেঁষে দুপুর আড়াইটার দিকে শুভ সন্ধ্যা’য় পৌঁছেন তারা। এছাড়া সড়ক পথে হাজার হাজার মানুষ জোছনা উৎসবে যোগ দিতে বিকেল থেকেই সমবেত হন সৈকতে। বিকেল ৪টায় সবমেত জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। এরপর উম্মুক্ত সৈকতে দলীয় নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দেশীয় খেলাধুলা, বাউল গান, পুঁথি পাঠ, পুতুল নাচ, যাদু প্রদর্শনী, যাত্রাপালা, হয়লা গান, রাখাইন নৃত্যসহ নানা অনুষ্ঠানের পর রাত ১০টার দিকে ফানুস উড়িয়ে ও দ্বীপালী ভাসিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ।

২০১৫ সাল থেকে জেলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক অঙ্গনের একদল জোছনাপ্রেমী মানুষ বরগুনার বিষখালী নদীর মোহনায় এ জোছনা উৎসবের শুরু করেন। এরপর থেকে প্রতিবছরই জোছনা উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বাড়ছে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যাও।

পথে পথে দুর্ভোগের শিকার দর্শনার্থীরাঃ অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার জোছনা উৎসবে যোগ দিতে আসা ফেরার পথে চরম দূর্ভোগের শিকার হতে হয় দর্শনার্থীদের। মূল উৎসবস্থলে প্রবেশ পথ সংকীর্ণ হওয়ায় ঘন্টার পর ঘন্টা গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করতে হয়েছে। এছাড়া প্রবেশ পথের কাছাকাছি দুটি মাটির সড়কের সংষ্কার কাজ চলমান থাকায় বেশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হয়। ফেরার পথে অন্তত ১০জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সড়ক পথে ফিরতে খেয়া ঘাটে প্রয়োজনের তুলনায় কম নৌকা থাকায় খেয়া পারাপারে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয় দর্শনার্থীদের। নৌ-পথে ভাটির প্রবল স্রোতের তোড়ে লঞ্চগুলো বঙ্গোপসাগরে ভেতরে চলে যায়। ফলে রাত ২টা নাগাদ লঞ্চগুলো বরগুনায় ফিরে আসে।  আয়োজক কর্তৃপক্ষের কাছে দর্শনার্থীদের দাবি, জোছনা উৎসবের পরবর্তী আয়োজনে স্থান নির্বাচন ও যাতায়াতের বিষয়টি যেন গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হয়।



বরগুনা/ রুদ্র রুহান/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়