ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

কৃষক নূরনবীর স্বপ্নপূরণের আশা

দেলোয়ার হোসাইন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কৃষক নূরনবীর স্বপ্নপূরণের আশা

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভার আদুরভিটি গ্রামের একজন সফল কৃষক নূরনবী। প্রতি বছরের মতো এবারও তিনি শিম, ফুলকপি, লাল শাক, ধনেপাতা, মুলা, বেগুন, টমেটোর মতো শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন।

বর্গা নেয়া জমিতে এগুলো চাষ করে জীবন-জীবিকায় স্বচ্ছলতা এসেছে তার। এ সাফল্য দেখে আশপাশের কয়েকজন কৃষক নূরনবীর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে শিম চাষসহ অন্যান্য শীতকালীন আবাদে ঝুঁকছেন।

চলতি শীতকালীন শিম চাষে নূরনবী দেড়কানি জমি বর্গা নিয়েছেন। প্রতিদিন ভোরে তিনি ছুটে যান তার খেতে। গাছে ইতোমধ্যে শিম ধরা শুরু করেছে, বাড়ছে তার স্বপ্নপূরণের আশা।

একই সঙ্গে স্বপ্নপূরণের আশা নিয়ে ফসল ঘরে তোলার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। বাজারে বিক্রি করে লাভের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। গত বছরের তুলনায় এবার বেড়েছে তার চাষের হার।

সরেজমিনে মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর বাজার উপজেলা পরিষদ রোড মেইন রাস্তার পাশে তার শিম খেতে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শিম খেত। কয়েকজন কৃষকের শিম চাষের দৃশ্য দেখা যায়। নূরনবী ব্যস্ত শিম খেতের যত্ন নিতে।

কোনো কোনো গাছে ইতোমধ্যেই ফুটেছে শিমের ফুল। আবার কোনো গাছে শিম ধরাও শুরু করেছে। তাইতো তিনি খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

আরও দেখা যায়, শুধু শিম আবাদ নয়, পাশাপাশি নানা ধরনের সবজির আগাম চাষ বদলে দিচ্ছে চাষি নূরনবীর ভাগ্য। তিনি শিমের পাশাপাশি একই জমিতে লাল শাক, মুলা শাক ও পাট শাক আবাদ করে বিঘা প্রতি আয় করছেন ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।

কৃষক নূরনবী হানান বলেন, ‘ইতোপূর্বে আমি অন্যের ৮৫ শতাংশ (দেড়কানি) জমি ১০ হাজার টাকায় বর্গা নিয়ে শিম চাষ করেছি। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে আমার ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ হয়। এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।’

এ বছরও ৭৫ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে শিম চাষ করেছেন তিনি।

এ পর্যন্ত তার কীটনাশক ও বদলি মিলে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। শিম তোলা পর্যন্ত তার আরও ৭-৮ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। খেত রোগ মুক্ত ও আবহাওয়া অনুকূলসহ ভালো দাম থাকলে তার ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা শিম বিক্রি করা যাবে। পুরো খরচ বাদ দিলে বিঘা প্রতি ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব।

তবে, এ উপজেলায় শুধু শিমই নয়, পাশাপাশি নানা ধরনের সবজির আগাম চাষ বদলে দিচ্ছে চাষিদের ভাগ্য। তারা শিমের পাশাপাশি একই জমিতে বেগুন, লাল শাক, মুলা শাক ও পাট শাক আবাদ করে বিঘা প্রতি আয় করছেন ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা।

উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র দাস বলেন, ‘মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের যেসকল জমিতে ধান বা অন্য ফসল আবাদ করা সম্ভব নয়, সেকল জমিতে শিম ও বেগুন, টমেটোসহ অন্যান্য সবজি আবাদ করা সহজতর। এ অঞ্চলের মাটি সবজি চাষের উপযোগী। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমরা সবসময় মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের তদারকি ও বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে পরামর্শ দিয়ে থাকি। গত বছর শীতকালীন সবজি চাষে বাম্পার ফলন হয়েছিলো। এবারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।’

মতলব উত্তর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সালাউদ্দিন জানান, চাষিদের শিম ও বেগুন চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে সহযোগিতাও দেয়া হয়েছে। ফলে, উপজেলার এই অঞ্চলের কৃষকরা আগাম শীতকালীন সবজি শিম ও বেগুন চাষ করছেন। এ অঞ্চলের মাটি বেগুন ও শিম চাষের উপযোগী হওয়ায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা আগাম শিম চাষ করেছেন। শিম চাষ ও বিভিন্ন সবজি চাষের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।



চাঁদপুর/হাকিম মাহি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়