ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

নলডাঙ্গা হানাদার মুক্ত হয়েছিল ১৪ ডিসেম্বর

নাটোর সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫২, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নলডাঙ্গা হানাদার মুক্ত হয়েছিল ১৪ ডিসেম্বর

নাটোরের নলডাঙ্গা হানাদার মুক্ত হয়েছিল ১৪ ডিসেম্বর। বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদার ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর ও মুজাহিদদের কবল থেকে এইদিনে মুক্ত করে নলডাঙ্গাকে।

তাই শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মুক্ত দিবসও পালিত হচ্ছে নলডাঙ্গায়। নলডাঙ্গা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সংগঠন পতাকা উত্তোলনসহ সকালে আনন্দ শোভাযাত্রা, পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।

স্থানীয়রা জানান, ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে ইতিহাসের বর্বরোচিত গণহত্যার পর যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, এতে নলডাঙ্গার মানুষও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করে। এ উপজেলার খোলাবাড়িয়া, বাঁশিলা, পাটুল, হাপানিয়া, মাধনগর, সোনাপাতিল, ডাকাতিভিটা ও নলডাঙ্গা গ্রাম থেকে বেশ কিছু সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা বিভিন্ন এলাকায় সম্মুখ যুদ্ধে শত্রুকে পরাস্ত করে নিজ এলাকায় ফিরে আসে। পরে তারা নলডাঙ্গা এলাকাকে শত্রু মুক্ত করতে অবস্থান নেয়। তাদের এই অবস্থানের খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় রাজাকার বাহিনী পাক সেনাদের জানিয়ে দেয়। ফলে পাক সেনাদের আনাগোনা বেড়ে যায়।

১৩ ডিসেম্বর সকালে মুক্তিযোদ্ধারা নলডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন প্লাটফর্মের দক্ষিণে নওপাড়া ব্রিজের পাশে রেললাইন উপড়ে ফেলে। এতে একটি ট্রেন লাইনচ্যুত হয় এবং রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে কেউ এতে হতাহত হয়নি। পরে তা মেরামত করলে রেল চলাচল স্বাভাবিক হয় এবং ট্রেনে করে পাক সেনারা যাতায়াত শুরু করে। ১৪ ডিসেম্বর সকালে পুনরায় মুক্তিযোদ্ধারা রেল লাইনে উপড়ে ফেলে এবং বারনই নদীর উত্তর পার্শ্বে বাঙ্কার খনন করে অবস্থান নেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের খবর পেয়ে বিকেলে পাকসেনারা বাসুদেবপুর থেকে ট্রেনে নলডাঙ্গায় রওনা দেয়। পথে নওপাড়া ব্রিজের কাছে পৌঁছলে লাইন উপড়ে ফেলা দেখে তারা ট্রেন থেকে নেমে মার্চ করতে করতে স্টেশন প্লাটফর্মের দিকে অগ্রসর হয়। পাক সেনারা নলডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন প্লাট ফর্মে ওঠা মাত্র নদীর উত্তর পাশ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা গুলি বর্ষণ করতে থাকে। পাক সেনারাও পাল্টা গুলি বর্ষণ শুরু করে। এভাবে প্রায় চারঘন্টা ব্যাপী চলে যুদ্ধ।

পাকসেনাদের সাথে দীর্ঘ সময় ধরে চলা অসম যুদ্ধে রসদ শেষ হয়ে গেলে মুক্তিযোদ্ধারা সরে যাওয়ার পর পাকবাহিনীর দোসর রাজাকাররা গ্রামে ঢুকে লুটপাট সহ বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। পরে তারা গাংগইল গ্রামের আব্দুর রাজ্জাককে গুলি করে হত্যা করে। পরে খবর পেয়ে এয়ার মার্শাল আবুল বাশার ও খালেদ মোশারফ দুটি বিমান নিয়ে আকাশে টহল দিতে থাকে। একপর্যায়ে পাক সেনাদের ওপর বিমান থেকে গুলি বর্ষণ ও বোমা ছুড়তে থাকে। পাক সেনারা পিছু হটতে থাকে। নলডাঙ্গা শত্রু মুক্ত হয়।

 

নাটোর/আরিফুল ইসলাম/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়