ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

আজ কালীগঞ্জ ও পূবাইল এলাকা মুক্ত হয়

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৪৯, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আজ কালীগঞ্জ ও পূবাইল এলাকা মুক্ত হয়

আজ ১৫ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক-হানাদার মুক্ত হয় গাজীপুরের কালীগঞ্জ ও পূবাইল এলাকা।

টানা চার দিন যুদ্ধ শেষে পাক-হানাদাররা মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধে নিহত হয় শতাধিক পাক সেনা। বিজয়ের একদিন আগে এই এলাকা হানাদারমুক্ত হলেও তারা আগুনে জ্বালিয়ে দেয় বহু গ্রাম, নির্বিচারে হত্যা করে শত শত মানুষকে।

মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুজ্জামান লিয়াকত, আতাউর রহমান মাস্টার ও কালীগঞ্জ থানার তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বদরুজ্জামান খসরুর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টঙ্গী থেকে কালীগঞ্জ পর্যন্ত তখন একমাত্র রেলপথ ছাড়া যোগাযোগের মাধ্যম ছিল না। তাই পাক বাহিনী সর্বশেষ তাদের ঘাঁটি স্থাপন করে পূবাইল রেলস্টেশন ও কালীগঞ্জের বালু নদীর ব্রিজ পর্যন্ত এলাকা জুড়ে। ওই এলাকার বহু গ্রাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয় পাক সেনারা।

বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় কালীগঞ্জের বাড়িয়া ইউনিয়নের বাড়িয়া গ্রামটি। পাক হানাদার বাহিনী এদেশীয় দোসরদের সহযোগিতায় ওই গ্রামে ঢুকে শতাধিক নারী-পুরুষকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে। এর প্রধান কারণ ছিল ওই গ্রামে সংখ্যালঘু মানুষের বসবাস ছিল উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ভাদুন, ছোট কয়ের, সোড়ল, নয়ানীপাড়া, সাপমাড়া, পূবাইল বাজারসহ বহু গ্রাম পুড়িয়ে দেয়।

১১ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় মিত্র বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তায় নরসিংদী থেকে রেলযোগে কালীগঞ্জে ঢুকতে শুরু করে। ১২ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় সরাসরি যুদ্ধ। ১৪ ডিসেম্বর কালীগঞ্জের বান্দাখোলা এলাকা থেকে মুক্তি বাহিনীর গ্রুপ কমান্ডার বদরুজ্জামান খসরু দল; বিভিন্নস্থান থেকে আলী হোসেন, খন্দকার মুঞ্জু, আজিজ, বাতেন মোল্লার দল ও রূপগঞ্জের একটি দল ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে একত্রিত হয়ে পূবাইলে পাক বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেয়।

পরে মুক্তি ও মিত্রবাহিনী অবস্থান নেয় কালীগঞ্জের নলছাটায়। গ্রুপ কমান্ডার বাতেনের দল অবস্থান নেয় নলছাটা থেকে বাড়িয়া হয়ে তিতারকুল পর্যন্ত এলাকা জুড়ে। তারা জয়দেবপুর অর্ডিন্যান্সে অবস্থানরত পাক সেনাদের প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ওঁৎ পেতে থাকে। ওই অবস্থায় একটানা চার দিন মুক্তি ও মিত্র বাহিনীর মর্টারশেল ও কামানের আক্রমণে ক্ষতবিক্ষত হয় পাক সেনাদের পূবাইল ঘাঁটি।

পরে ১৫ ডিসেম্বর পাক সেনারা আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

 

কালীগঞ্জ/রফিক সরকার/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়