চাঁদা না দেয়ায় রাবির স্কুলের নির্মাণকাজ বন্ধ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের নেতাকে চাঁদা না দেয়ায় শেখ রাসেলের নামে নির্মাণাধীন স্কুলের কাজ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ করেছেন নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধানকারী।

রোববার দুপুরে ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্তসহ দুই ছাত্রলীগ নেতা গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন।

স্কুলটির নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধানকারী মমতাজ উদ্দীন জানান, প্রায়ই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কর্মস্থলে গিয়ে তার কাছে চাঁদা দাবি করেন। রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্তসহ দুইজন গিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন এবং ম্যানেজার আশরাফুল ইসলামকে নিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এরপর থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী মাঠের দক্ষিণ পাশে স্কুলের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। নির্মাণ কাজের জন্য বরাদ্দ ১০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিকদার কনস্ট্রাকশন স্কুলের নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায়। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু হয়।

ম্যানেজার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস্ কমপ্লেক্সের পেছনে ধরে নিয়ে যায়। বিষয়টি শীঘ্রই মীমাংসা করে নেয়ার কথা বলে আমাকে ছেড়ে দেয়।’ ছাত্রলীগ নেতা বৃত্তের ছবি দেখালে বৃত্ত তাকে নিয়ে গিয়েছিলেন বলে নিশ্চিত করেন আশরাফুল। তবে বৃত্তের সঙ্গে থাকা অন্যজনের পরিচয় জানাতে পারেননি তিনি।

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সরেজমিন নির্মাণাধীন স্কুল প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা কাজ ছেড়ে একসঙ্গে মাঠে বসে আছেন। হুমকির পর থেকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তারা। সবুজ নামের এক শ্রমিক বলেন, ‘‘সকাল থেকে কাজ করছিলাম। দুপুরে দুইজন এসে ম্যানেজারকে কাজ বন্ধ করে দিতে বলেন। তাকেও নিয়ে যায়। কাজ করতে গেলে কখন কী ঝামেলা হয়? তাই আমরা কাজ করছি না।’’

মমতাজ উদ্দীন বলেন, ‘‘আজ ম্যানেজার আশরাফুলকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা অনিরাপত্তায় ভুগছি। শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভেবে কাজ বন্ধ রয়েছে। এভাবে চললে কাজ শেষ হবে না।’’ এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

তবে অভিযুক্ত সুরঞ্জিত প্রসাদ বৃত্ত বলেন, ‘‘আমি আজকে স্কুলের ওদিকে যাই-ই নি। এগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমি কাউকেই তুলে আনিনি কিংবা স্কুলের কাজ বন্ধও করে দেইনি।’’

এ বিষয়ে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু দাবি করে বলেন, আজকের ঘটনা এখনো তারা জানেন না। তবে কেউ যদি ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে এমন কাজ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা শুনেছি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘‘আমি এখনো অভিযোগ পাইনি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর পুত্রের নামে বিদ্যালয় হবে আর কেউ চাঁদা না পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেবে, এটা মেনে নেয়া হবে না।’’

 

রাবি/সাইফুর রহমান/বকুল