ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

অর্থাভাবে মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্র চন্দ্রের চিকিৎসা হচ্ছে না

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫২, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
অর্থাভাবে মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্র চন্দ্রের চিকিৎসা হচ্ছে না

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের দুর্গম হাওরবেষ্টিত ঝিলুয়া গ্রাম। এখানে দালান হাটিতে মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরীর বসবাস।

বিজয়ের মাসে তিনি কেমন আছেন, এ খবর জানতে সরেজমিন সেখানে যাওয়া। বাড়িতে গিয়ে বীরেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরীর দেখা মেলে। তিনি খালি গায়ে বাড়িতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কারো সঙ্গে কথা বলছেন না।

এ সময় তার ভাতিজি দেবী চৌধুরী ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। তিনি তার চাচা বীরেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরীকে এই প্রতিবেদকের কাছে নিয়ে এসে চেয়ারে বসান। মুক্তিযুদ্ধকালীন তার জীবনের গল্প জানতে চাইলে তিনি বলেন,  এগুলো জেনে কী লাভ? এ সময় তিনি বেদনা ভারাক্রান্ত হয়ে পড়েন। আর কিছু তিনি বলতে চাননি।

ভাতিজি দেবী চৌধুরী বলেন, তার বাবা, চাচা ও ফুপুরা ছয় জন। এরমধ্যে বীরেন্দ্র চন্দ্র চতুর্থ। বীরেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী এসএসসি পাস। তিনি এখনো বাংলা ও ইরেজি পড়তে পারেন।

বীরেন্দ্র চন্দ্র যুদ্ধের কয়েক বছর পর মানসিক ভারসাম্য হারান। হঠাৎ করে চটে যান। তখন ঘরের সবাইকে সতর্ক থাকতে হয়। উন্নত চিকিৎসা পেলে তিনি সুস্থ হতে পারেন। অর্থাভাবে চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না।

চাচা বীরেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী বিয়ে না করায় তারা তাকে দেখাশুনা করছেন বলে জানান দেবী চৌধুরী। তাদের ঘরে তিনি বসবাস করছেন। বীরেন্দ্র চন্দ্র মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মাসে ১২ হাজার টাকা ভাতা পান। এ টাকায় তার চিকিৎসা চালানো কঠিন। চাচার উন্নত চিকিৎসা করানোর জন্য দেবী চৌধুরী বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানান।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যুদ্ধে শেষে বীরেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী দালানহাটিতে ফিরে আসেন। এর কয়েক বছর পর থেকে তিনি একা একা চলাফেরা শুরু করেন। কারো সঙ্গে কথা বলতেন না। বিয়েও করেননি। সেই থেকে তিনি ভাই দিগেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরীর ঘরে কয়েক বছর ও পরে বীরেশ চন্দ্র চৌধুরীর ঘরে কয়েক বছর বসবাস করছেন। একবার তিনি হারিয়ে গিয়েছিলেন;  পরে সবার সহযোগিতায় তাকে পাওয়া যায়।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার দিলীপ কুমার চৌধুরী বলেন, ঝিলুয়ার বীরেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরী, দিগেন্দ্র লাল চৌধুরী, পাহাড়পুরের সুরেন্দ্র চন্দ্র সরকারসহ চারজন ১১নং সেক্টরে যুদ্ধে যোগ দেন। যুদ্ধ শেষে তারা গ্রামে ফেরেন।

বীরেন্দ্র চন্দ্র চৌধুরীর দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান তিনি।


হবিগঞ্জ/মামুন চৌধুরী/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়