ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

হবিগঞ্জে জেরিন মৃত্যুর নেপথ্যে অপহরণ!

জেলা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:২০, ২১ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হবিগঞ্জে জেরিন মৃত্যুর নেপথ্যে অপহরণ!

হবিগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষার্থী মদিনাতুল কুবরা জেরিন মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। অপহরণকারীদের কবল থেকে রক্ষা পেতে সিএনজি অটোরিক্সা থেকে লাফ দিলে মৃত্যু হয় এই ছাত্রীর। 

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা তার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় ৩ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলার ধল গ্রামের দিদার হোসেনের ছেলে অপহরণকারী জাকির হোসেন (২০)। বাকী দুই আসামী একই উপজেলার পাটুলী গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে অটোরিক্সা চালক নূর আলম (২০) ও জাকিরের সহযোগী পাটুলী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে হৃদয় মিয়া (২০) পুলিশের নজরন্দী অবস্থায় রয়েছে বলেও জানিয়েছেন এসপি। 

এসপি জানান, সদর উপজেলার ধল গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে এবং রিচি উচ্চ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী জেরিন। আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা ছিল তার। প্রায়ই জেরিনকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করতেন জাকির। ১ মাস পূর্বে বিষয়টি জাকিরের পরিবারকে জানালে তার বাবা-মা জাকিরকে শাসিয়ে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েটিকে অপহরণের চেষ্টা করেন জাকির।  

শনিবার (১৮ জানুয়ারী) সকাল ৮টায় নূর আলমের অটোরিক্সার উঠে বিদ্যালয়ে যাচ্ছিল জেরিন। আগে থেকেই গাড়িতে ছিলেন হৃদয়। পথিমধ্যে অটোরিক্সায় তুলে নেয়া হয় জাকিরকে। সিএনজি অটোরিক্সাটি জেরিনের স্কুল পেরিয়ে গেলেও তাকে নামিয়ে দেয়া হচ্ছিল না। এ সময় নামার চেষ্টা করলে জেরিনের সাথে ধ্বস্তাধস্তি শুরু হয় অপহরণকারীদের। এক পর্যায়ে সে অটোরিক্সা থেকে লাফ দিলে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পায়।   

পরবর্তীতে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার (১৯ জানুয়ারী) সকালে মারা যায় মেয়েটি। 

দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার হলে অটোরিক্সা চালকের শাস্তি দাবিতে আন্দোলনে নামে এলাকাবাসী ও জেরিনের সহপাঠারীর। ওইদিন রাতেই থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন মেয়েটির বাবা। এক পর্যায়ে মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারী) জাকিরকে গ্রেফতার করলে তিনি ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। 

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, জাকির গ্র্যাজুয়েশন সমাপ্ত করে বেকার অবস্থায় ছিলেন। একতরফা প্রেমে সাড়া না দেওয়ায় জেরিনকে অপহরণের পরিকল্পনা করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাসুক আলীসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

 

হবিগঞ্জ/মামুন চৌধুরী/নাসিম 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়