ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল শুরু

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৪৬, ৩০ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল শুরু

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজ চলাচল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়ারছড়াস্থ বাঁকখালী নদীর বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে উদ্বোধন করেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী।

শুক্রবার সকালে এই ঘাট থেকে জাহাজটি পর্যটকদের নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দেবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ফিতা কেটে উদ্বোধনের পর জাহাজটি নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রীসহ অন্য অতিথিদের নিয়ে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সংক্ষিপ্ত সফরে রওনা হয়।

জাহাজটি বাঁকখালী নদীর মোহনা পার হয়ে সমুদ্রের নাজিরারটেক পয়েন্টে পৌঁছলে চরে সজোরে ধাক্কা খেয়ে আটকা পড়ে। এ সময় জাহাজে থাকা নৌ-পরিবহণ প্রতিমন্ত্রীসহ অন্য অতিথিরা আতংকিত হয়ে পড়ে। পরে জাহাজটি গতিপথ পরিবর্তন করে সমুদ্রে কিছুদূর যাওয়ার পর পুনরায় বাঁকখালী নদীর বিআইডব্লিটিএ ঘাটে ফিরে আসে।

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে গিয়ে নৌ-পরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কর্ণফুলী এক্সপ্রেস চলাচলের মধ্য দিয়ে কক্সবাজারে পর্যটনের নতুন দ্বার উন্মুক্ত হলো। এর আগে পর্যটকদের সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নানা ধরণের দুর্ভোগ পোহাতে হতো। দীর্ঘ সড়কপথ পাড়ি দিয়ে টেকনাফ পৌঁছে জাহাজযোগে পর্যটকদের সেন্টমার্টিন যেতে হতো। এখন পর্যটকদের কক্সবাজার থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, কর্ণফুলী এক্সপ্রেস চালুর মধ্য দিয়ে পর্যটকদের দুর্ভোগ লাঘব হবে। দীর্ঘ সমুদ্রপথ ভ্রমণের পাশাপাশি পাহাড়, নদী ও সমুদ্র উপকূলের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে পারবে পর্যটকরা।

এতে কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেন প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আদিবুল ইসলাম ও কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ রশিদ সহ অন্য অতিথিরা।

পর্যটকবাহী জাহাজটি উদ্বোধনের পরপরই সমুদ্রে জেগে উঠা চরে আটকে যাওয়া প্রসঙ্গে কর্ণফুলী এক্সপ্রেসের পরিচালক এম. হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর বলেন, নাবিক গতিপথ ভুল করায় সমুদ্রে পানির নিচে জেগে উঠা চরে আটকা পড়ে। এতে সজোরে ধাক্কা খাওয়ায় জাহাজে থাকা যাত্রীরা ভয় পেয়েছিল।

তবে বিষয়টি দুর্ঘটনা ঘটার মতো কারণ ছিল না বলে দাবি করে জাহাজটির পরিচালক বাহাদুর বলেন, জাহাজটি উদ্বোধনের আগে কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচলের উপযোগিতা নিয়ে পরীক্ষণমূলক যাছাই করা হয়। এতে তারা সফলতাও পেয়েছে।

বাহাদুর বলেন, প্রতিদিন সকাল ৭টায় জাহাজটি সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছাড়বে এবং সেখান থেকে ফিরবে বিকেল সাড়ে ৩টার পর।

কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটের দীর্ঘ ৯৫ কিলোমিটার সমুদ্রপথে জাহাজটিতে যাত্রীদের নিরাপত্তায় সবধরণের ব্যবস্থাসহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা রয়েছে বলে জানান জাহাজের কক্সবাজারের এ পরিচালক।

বাহাদুর জানান, জাহাজে যাত্রী ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৫৪৭ জন। এর মধ্যে আসন (চেয়ার) ৫১০টি এবং ১৭টি কেবিন। ইকোনমিক আসনের চেয়ার (দ্বিতীয় শ্রেণী) ভাড়া ২ হাজার টাকা এবং বিজনেস আসনের চেয়ার (প্রথম শ্রেণী) ২ হাজার ৫০০ টাকা।

কেবিনের মধ্যে রয়েছে সিঙ্গেল, ডাবল, ইকোনিমিক ও ভিভিআইপি শ্রেণীর। এগুলোর মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে- সিঙ্গেল (১ জনের) ৫ হাজার, ডাবল (২ জনের) ৮ হাজার, ইকোনিমিক (২ জনের) ১০ হাজার এবং ভিভিআইপি (২ জনের) ১৫ হাজার টাকা। প্রতিটি কেবিনে অতিরিক্ত যাত্রীদের জন্য ইকোনিমিক আসনের চেয়ারের (দ্বিতীয় শ্রেণীর) ভাড়ার টিকেট সংগ্রহ করতে হবে।


সুজাউদ্দিন রুবেল/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়