ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কুলচাষে কপাল খুলেছে চাষিদের

এমএম আরিফুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১৬, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কুলচাষে কপাল খুলেছে চাষিদের

আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় নাটোরে কুলের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। কুলচাষে কপাল খুলেছে তাদের।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জানা যায়, উঁচু এবং উষ্ণতম অঞ্চলে কুলের ফলন ভালো হয়। নাটোরের লালপুর, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর, সিংড়া ও সদর উপজেলায় কুল চাষ হয়ে থাকে।

নাটোর সদর উপজেলার হরিশপুর এলাকার কুলচাষি আবু তাহের জানান, ১ বিঘা জমিতে কুল চাষ করতে সার, কীটনাশক ও সেচের জন‌্য ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। ফলন ঠিকমতো হলে এবং দাম ভালো পেলে প্রতি বিঘায় প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়।

জেলার বনপাড়া বাইপাস, ওয়ালিয়া বাজার, সদর উপজেলার চানপুর বাজারসহ বেশ কয়েকটি স্থানে কুলের পাইকারি বাজার গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৮-১০টি আড়তে প্রতিদিন কুল বেচাকেনা হচ্ছে।

দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার খ্যাত নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া বাইপাস মোড়ে গড়ে ওঠা কুলের আড়ত এ সময় বেচাকেনায় সরগরম থাকে। প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি টাকার বিভিন্ন জাতে কুল কেনাবেচা হয় এখানে। এ আড়তে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ১২টি জেলার কুলচাষি ও পাইকাররা কুল নিয়ে আসেন। এসব কুল ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ব্যবসায়ীরা পাইকারি দরে কিনে ট্রাকে বোঝাই করে নিয়ে যান।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২০টি আড়তে কুল কেনাবেচা চলছে। এর মধ্যে আপেল কুল, থাই কুল, বাউকুল আলাদাভাবে রাখা হয়েছে। কুলের সতেজতা ও মান অনুসারে দাম হাকিয়ে আড়তদাররা তা বিক্রি করছেন।

আড়তদার মুক্তার হোসেন জানান, নাটোর, পাবনা, রাজশাহী, কুষ্টিয়া, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের চাষিরা এই আড়তে কুল নিয়ে আসেন।

ডায়মন্ড ফল ভান্ডারের মালিক ডায়মন্ড হোসেন জানান, এখানকার কুল ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, কুমিল্লা, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিলেট, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ ১৪/১৫টি জেলায় পাঠানো হয়। সবচেয়ে সুস্বাদু আপেল কুল ও থাই কুল মণপ্রতি ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাউকুল ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মেহেরপুরের গাংনী থেকে আসা কুল ব্যবসায়ী আপেল মাহামুদ জানান, এলাকার চাষিদের বাগান থেকে সরাসরি পাইকারি দরে কুল কিনে আড়তে নিয়ে আসি। আড়তে কুল বেচাকেনায় হয়রানি ও ঝামেলা কম থাকায় এখানকার আড়তের প্রতি ব্যবসায়ীদের আগ্রহ তৈরি হয়েছে।

পাবনার চাটমোহর উপজেলার কুলচাষি সুরুজ আলী বলেন, সহজ যাতায়াতের কারণে বনপাড়ার এই বাইপাস মোড়ের কুলের আড়তটি ক্রমশ বড় হচ্ছে। বলা যায়, এটিই দেশের সবচেয়ে বড় কুলের আড়ত।

বনপাড়ার পৌর মেয়র কে এম জাকির হোসেন জানান, কোনো খালি বড় জায়গা না থাকায় মহাসড়কের পাশেই আড়ত গড়ে উঠেছে। এটা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। বড় জায়গায় আড়ত স্থানান্তরের চেষ্টা করা হচ্ছে।

নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সুব্রত কুমার সাহা বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার কুলের ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা। খরচ কম হওয়ায় অন্যান্য ফলবাগানের তুলনায় কুলবাগানের সংখ্যা বাড়ছে। ভালো মানের কুল উৎপাদনে চাষিদের প্রশিক্ষণ এবং সঠিক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।



নাটোর/আরিফুল ইসলাম/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়