ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁও থেকে চীনে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পরিবারে আতঙ্ক

জেলা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২১:৫৬, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঠাকুরগাঁও থেকে চীনে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পরিবারে আতঙ্ক

বারান্দার দেয়ালে মাথা, চোখে জল। মুখে শুধু একটাই কথা, ‘আল্লাহ তুই মোর ছুয়াটাক সুস্থ রাখিস, রহমত করিস। মোর ছুয়াটা যাতে সুস্থ থাকে।’

মঙ্গলবার সকালে এসব বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন চীনে পড়তে যাওয়া মোকছেদুল মমিনের মা মনোয়ারা বেগম। তিনি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোলাখুড়ি গ্রামের বাসিন্দা।

চীনে উচ্চশিক্ষা অর্জনের জন্য ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে যাওয়া প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীদের পথে যেন বাধা হয়ে দাঁড়ালো করোনাভাইরাস। ঠাকুরগাঁও জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী রয়েছেন চীনে। দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের প্রতি আহব্বান জানিয়েছেন চীনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের। দিনের পর দিন দুশ্চিন্তা ও আতঙ্ক বেড়েই চলছে পরিবারের স্বজনদের।

গত বছর কৃষি কাজ করে টাকা জড়িয়ে নিজের ছেলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎসহ বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের আশায় মোকসেদুল মমিনকে পড়াশোনার জন্য চীনে পাঠানো হয়। সবকিছুই যেন ছিলো ভালো। হঠাৎ টিভিতে চীনে করোনাভাইরাসে মৃত্যুর কথা শুনে যেন গা শিউরে ওঠে পরিবারটির। দুশ্চিন্তায় পড়ে যান সকলেই। ছেলের সঙ্গে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ হওয়ার পরও চিন্তার শেষ নেই বাবা মায়ের।

বাবা খাদেমুল ইমলাম জানান, অনেক কষ্টে কৃষিকাজ করে আদরের ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি। পড়াশোনা করে বুড়ো বাবা-মায়ের পাশে থাকবে, পূরণ করবে আমাদের সকল স্বপ্ন। কিন্তু এখন তো শুনতেছি সেখানে যে বালাই (ভাইরাস) তাতে কতো লোকই মারা গেছে। যদি এই বালাই (ভাইরাস) না কমে তাহলে আমার ছেলেকে সুষ্ঠুভাবে আমার দেশে ফিরিয়ে আনতে আমি প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন করছি।

চীন থেকে এক ভিডিও বার্তায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের ফেরার আকুতি জানিয়েছেন মোকছেদুল মমিন। তিনি বলেন, রুম থেকে বের হতে পারছি না। আমাদের নিষেধ করা হয়েছে। আমরা যাতে খুব প্রয়োজন ছাড়া বের না হই এমনি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

নাসির উদ্দিন নামের আরেক শিক্ষার্থী ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, আমাদের ইউনিভার্সিটির শিক্ষকরা সব-সময়ই আমাদের স্বাস্থ্যের খবর রাখছেন। আমরা যারা এখানে এসেছি এখন পর্যন্ত কারো কোন সমস্যা হয়নি। তবে পরিবারের স্বজনদের বলতে চাই চিন্তার কারণ নেই। আশা করি আমরা ভালো থাকবো।

শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বাংলাদেশ সরকার চীনে অবস্থানরত কিছু বাংলাদেশি যাতে দেশে আসতে পারে সেটার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। তবে আমাদের ঠাকুরগাঁও জেলার বেশ কিছু ছাত্র ও ব্যবসায়ী এখনো চীনে রয়ে গেছে। তাদের মধ্যে একজন একটি ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশে আশার আকুতি জানিয়েছেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেষ্টা করছি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানোর।


ঠাকুরগাঁও/তানভীর হাসান তানু/নাসিম 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়