নরসিংদীতে চলছে বাউল মেলা

নরসিংদীতে চলছে ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলা।

শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

শহরের কাউরিয়াপাড়ায় মেঘনা নদীর তীরে বাউল আখড়াধামের এ মেলায় সমবেত হয়েছেন দেশ-বিদেশের শতাধিক বাউল। মেলা উপলক্ষে মেঘনার পাড়ে বাঙালির চিরচেনা মুখরোচক খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। দর্শনার্থীদের ভিড়ে জমে উঠেছে মেলা।

আখড়া বাড়ি সূত্রে জানা গেছে, আনুমানিক ৫০০ বছর আগে নরসিংদীতে আবির্ভাব হয়েছিল এক বাউল ঠাকুরের। তিনি নিজেকে শুধু বাউল বলেই পরিচয় দিতেন। বাউল ঠাকুরের প্রকৃত নাম, ধর্ম জানেন না এখানকার কেউ।

মেঘনা নদীর তীরে বাউল আখড়া ধামে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই মেলা। কে প্রথম এখানে বাউল মেলার আয়োজন করেন তার তথ্যও জানা নেই কারো। এখন প্রাণেশ কুমার ঝন্টু বাউল আখড়া বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

মেলা উপলক্ষে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা মুখরোচক খাবার আমিত্তি, জিলেপী, সন্দেশ, বার মিঠাই, দধি, মুড়ালি, গুড়ের তৈরি মুড়ি ও চিড়ার মোয়া, তিলের মোয়া, তিলের সন্দেশ, খাস্তা, কদমা, নারকেলের নাড়ু, তিলের নাড়ু, খাজা, গজা, নিমকি, মনাক্কা, গাজরের হালুয়া, পিঠাসহ রকমারি খাবার এবং খেলনা, গৃহস্থালীর তৈজসপত্র, আসবাবপত্র, বিভিন্ন ধরনের পোশাক, মাটি ও বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রসহ নানা পণ্যের স্টল নিয়ে বসেছেন।

বাউল আখড়া বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক প্রাণেশ কুমার ঝন্টু বাউল বলেন, বাউল সম্প্রদায়ের নিয়ম অনুযায়ী মাঘি পূর্ণিমা তিথিতে এই মেলার আয়োজন করা হয়। প্রচারণা ছাড়াই প্রতিবছর ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের উপস্থিতিতে জমজমাট হয়ে উঠে এই মেলা।

তিনি জানান, মেঘনার তীরে আগে এ মেলা চলতো মাসব্যাপী। তখন মেঘনা নদী দিয়ে যাওয়ার সময় সওদাগররা বড় বড় পাল তোলা নৌকা তীরে ভিড়িয়ে এ ঘাটে পুণ‌্যস্নান করে ঘি প্রদীপ জ্বেলে মনবাসনা পূর্ণ করতে আসতেন। এখান থেকে তারা কাঠের তৈরি খাট-পালংসহ নানা গৃহস্থালী জিনিসপত্র সওদা করে নিয়ে যেতেন।


গাজী হানিফ/ইভা