ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জ্ঞানার্জন ঘরটি তালা বন্ধ!

আরিফুর ইসলাম সাব্বির || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৫০, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জ্ঞানার্জন ঘরটি তালা বন্ধ!

প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে জ্ঞানার্জনের অন্যতম মাধ্যম পাঠাগার। অথচ ধামরাইর সেই জ্ঞানার্জন ঘরটি তালা বন্ধ। প্রশাসনও এ ব্যাপারে পদক্ষেপহীন নিশ্চুপ।

মাসের পর মাস লাইব্রেরির প্রধান ফটকে তালা ঝুলতে দেখে স্থানীয়রাও ক্ষুব্ধ। বইপ্রেমীরা মাঝেমধ্যে এলেও জ্ঞানের দরজা বন্ধ দেখে চরম ক্ষাভ নিয়ে হতাশ মনে ফিরে যাচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লাইব্রেরির প্রধান ফটকে তালা ঝুলছে। ফটকের তালায় মরচে ধরেছে। অনাদরে অযত্নে থাকতে থাকতে বিল্ডিংটিতে পড়েছে ময়লার আস্তরণ। ফটকের সামনের আঙিনায়ও জমে আছে শেওলা। অবহেলা ও অযত্নে নিশ্চয়ই ইতোমধ্যে নষ্ট হয়েছে পুরানো অনেক দূর্লভ বই।

জানা যায়, ১৯৯৫ সালে পাঠাগারটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। জ্ঞানের আলো ছড়াতে থাকে ধামরাই পাবলিক লাইব্রেরি । সে সময় পাঠাগারে নানা পত্রিকা, ম্যাগাজিন রাখা হত। এতে উপকৃত হতেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক মনোয়ার হোসেন বললেন, ‘একসময় নিয়মিত পাঠাগারটি খোলা হতো। এখানে এসে অনেকেই পড়াশোনা করতেন। পত্রিকা, ম্যাগাজিন রাখা হতো পাঠাগারে। পড়াশোনা করার অন্যতম এক জায়গা হিসেবে আমরা সবাই এখানে আসতাম। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে এটা বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা পাঠাগারটি ব্যবহার করতে পারছে না। বন্ধ থাকতে থাকতে হয়ত বইগুলোও নষ্ট হয়ে গেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী স্থানীয় সোনিয়া আক্তার ইভা বলেন, ‘ক্লাশের পড়ার বাইরে জ্ঞান অর্জনের জন্যে পাঠাগার একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। আমাদের ধামরাইয়ে তেমন পাঠাগার বা পড়ার জায়গা নেই।’

ইভা বলেন, ‘পাঠাগার অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো নয়, পাঠাগার চালু থাকলে সবাই এর লাভটা নিতে পারে। পাঠাগারে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। তবুও পাঠাগার বন্ধ থাকবে কেন? পাঠাগার বন্ধ করে কার লাভ হচ্ছে?

ধামরাই উপজেলা বিতর্ক সংসদের সভাপতি সিয়াম সারোয়ার জামিল বলেন, ‘পাঠাগারটি বন্ধ হয়ে যাওয়া দুঃখজনক ও লজ্জার। ধামরাইয়ে এই পাঠাগারটি জ্ঞানের আলো ছড়ানোর মাধ্যম হতে পারত। অবিলম্বে এই পাঠাগারটি খুলে দেয়া হোক।’

ধামরাই উপজেলা পাঠাগার আন্দোলনকর্মী রাহাত বিন এস রহমান বলেন, ‘ধামরাইয়ে ধীরে ধীরে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বাইরে অন্যান্য শিক্ষার মাধ্যম কমে যাচ্ছে। সরকারি উদ্যোগে পাঠাগার সকলের পড়াশোনার আরেকটা উপায় হতে পারত। কিন্তু সেই পাঠাগারটিও অবহেলায় বন্ধ হয়ে গেছে। এটা খুব দুঃখজনক।’

এবিষয়ে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামিউল হক বলেন, ‘পাঠাগারটিতে দীর্ঘদিন ধরেই কোন জনবল নিয়োগ নেই। ফলে লাইব্রেরিটি বন্ধ রয়েছে। তবে আমরা উদ্যোগ নিচ্ছি। দ্রুততর সময়ের মধ্যে পাঠাগারটি খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’


সাব্বির/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়