ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বাংলা ভাষা চর্চায় ‘ভাষার প্রদীপ’ ও এক তরুণ সংগঠক

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২৫, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাংলা ভাষা চর্চায় ‘ভাষার প্রদীপ’ ও এক তরুণ সংগঠক

বাংলাভাষার ব্যবহার সর্বত্র নিশ্চিতকরণে কাজ করছেন লক্ষ্মীপুরের ফাহাদ বিন বেলায়েত। ‘ভাষার প্রদীপ’নামের সংগঠনের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।

ফাহাদ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বাঞ্চানগর গ্রামের সাংস্কৃতিক কর্মী মরহুম বেলায়েত হোসেন রিপনের ছেলে । সম্প্রতি রাইজিংবিডির সঙ্গে একান্ত আলাপ হয় তরুণ এই সংগঠকের সঙ্গে।

ফাহাদ বলেন, ‘বাংলা ভাষার ইতিহাস বাবার থেকে খুব ছোটবেলায় শুনেছি। এরপর পাঠ্যবই ও বিভিন্ন লেখকদের বই পড়েও জেনেছি। সে থেকেই এ ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জন্মায়।’

তিনি জানান, শুদ্ধ বাংলাভাষা চর্চা ও বাংলার ঐতিহ্য রক্ষায় সচেতনতামূলক কাজ ছোটবেলায় শুরু করেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছেন ২০০৫ সালে। মানুষকে বাংলাভাষা চর্চায় উদ্বুদ্ধকরণে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেশ টেলিকমকে কাজে লাগিয়েছেন তিনি। বাংলাভাষায় নিজ মোবাইল নম্বর বললেই পুরস্কৃত করা হতো গ্রাহকদের। এতে একদিকে অল্প সময়ে বাংলাভাষা চর্চার সুফল মিলেছে। অন্যদিকে দোকানটিও বেশ পরিচিতি লাভ করে।

সর্বত্র এটি ছড়িয়ে দিতে কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে ‘ভাষার প্রদীপ’ নামের সংগঠনটির প্রতিষ্ঠা করেন ২০০৮ সালে। পরে স্কুল-কলেজ, দোকান ও পার্কে শুদ্ধ বাংলাভাষা চর্চার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। বাংলার ঐতিহ্য মাটির বাসন-খেলনা, কলম ও শিক্ষা-উপকরণ পুরস্কার হিসাবে বিজয়ীদের দিয়েছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ‘মায়ের ভাষায় মাকে লিখি’ ব্যতিক্রমর্ধী চিঠি লেখার আয়োজন করেন ২০১৪ সালে। এতে শিক্ষার্থীরা মায়ের ভাষায় ছোট ছোট শব্দে আবেগ, অনুভূতি, প্রত্যাশা-প্রাপ্তি, সুখ-দুঃখের কথা প্রকাশ করছেন। যাত্রা শুরুর পর থেকেই ৫০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী মাকে চিঠি লিখেছেন। চিঠিগুলো সংরক্ষণ করে ভবিষ্যতে বই প্রকাশ ও গুরুত্বপূর্ণগুলো মায়েদের কাছে পৌঁছে দিবেন। ইতোমধ্যে ৭০টি চিঠি পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

এছাড়াও পর্যায়ক্রমে সারাদেশের স্কুল-কলেজগুলোতে এ কার্যক্রম পরিচালনা করার ইচ্ছা রয়েছে তার। সেক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ফেলে দ্রুত কাজটি করবেন।

ফাহাদের ‘ভাষার প্রদীপ’ সংগঠনটিতে বর্তমানে ২৫ জন সদস্য রয়েছে। গত কয়েকমাস পূর্বে চীনের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিঠি লেখার এ প্রতিযোগিতা করেছেন বাংলাদেশী একজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমে। ফাহাদ সংগঠনটির মাধ্যমে পথশিশুদের সহযোগিতা ও রক্তদান কর্মসূচি পালন করে আসছেন।

ফাহাদ বিন বেলায়েত বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের বাংলাভাষার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ বেড়ে যায়। গুরুত্বের সঙ্গে পালন করি একুশে ফেব্রুয়ারিকে। কিন্তু অন্য সময় আধুনিকতার অজুহাতে বিদেশী ভাষা নিয়ে পড়ে থাকি। এতে বতর্মান প্রজন্ম ভুলতে বসেছে বাংলাভাষা ও আন্দোলনের ইতিহাস। ভেস্তে যাচ্ছে ভাষা চর্চা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে সরকারের নানা উদ্যোগ।’ তাই তিনি অপ্রয়োজনে ভিনদেশীভাষা ও সংস্কৃতি ব্যবহার না করার আহবান জানান সকলের প্রতি।


ফরহাদ/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়