ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলায় ফেসবুকে অপপ্রচার, প্রবাসী গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪৪, ২৪ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলায় ফেসবুকে অপপ্রচার, প্রবাসী গ্রেপ্তার

পুলিশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগে কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে ইতালিফেরত প্রবাসীকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

ইতালিফেরত এই ব্যাক্তির নাম শেখ হোসাইন মো. ইকবাল। তিনি গত ৭মার্চ ইতালির রোম থেকে দেশে ফিরে আসেন।

পুলিশের দাবি, গত ১৩ মার্চ ফেসবুকে তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে তাকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী বানিয়ে চাঁদা দাবিসহ ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেছেন। পুলিশ বলছে, তাকে কোয়ারেন্টিনে থাকার চাপ দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে ফেসবুকে এ অপপ্রচারে নামেন তিনি।

এ ব্যাপারে রোববার (২২ মার্চ) মিঠামইন থানার উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে শেখ হোসাইন মো. ইকবালসহ দুজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। মামলার পরেই তাকে রাতে বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জানা গেছে, মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ হোসাইন মো. ইকবাল আট বছর ইতালির রোমে ছিলেন। গত ৭মার্চ তিনি গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন। তাকে বিমানবন্দর থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেন। কিন্তু তিনি নির্দেশনা না মেনে প্রতিদিন ঘাগড়া বাজারে আড্ডা দেওয়াসহ লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করছিলেন। খবর পেয়ে ১৩মার্চ বিকেল তিনটার দিকে মিঠামইন থানার উপ-পরিদর্শক নজরুল ইসলাম ও কিরণ চন্দ্র মন্ডলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘাগড়া বাজারে গিয়ে অন্য এক ব্যক্তির মাধ্যমে ইকবালকে নিজের ঘরে আলাদা একটি কক্ষে ১৪দিন কোয়ারেন্টাইন শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করতে বলেন। কিন্তু ইকবাল পুলিশের নির্দেশনা না শুনে বাড়ি থেকে বের হয়ে পুলিশের সঙ্গে হাত মেলানোর (হ্যান্ডশেক) চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের হুমকি দিলে তিনি চলে যান। এ সময় পুলিশ  তার স্ত্রী মোছা. বিউটিকেও এ বিষয়ে পরামর্শ দেয়। পরে ঘাগড়া বাজারে করোনা সচেতনতামূলক সভা করে ফিরে যায় পুলিশ।

মিঠামইন থানার ওসি মো. জাকির রব্বানি জানান, এ দিন রাতে ইতালি থেকে ফেরা ইকবাল তার একটি লাইভ বক্তব্য ধারণ করে ফেসবুকে আপলোড করেন। এতে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে পুলিশ তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা চেয়েছে এমন অভিযোগ করেন। তাছাড়া পুলিশের ইমেজ নষ্টের জন্য আরও বিভিন্ন অভিযোগ তোলেন। তার এই অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দৃষ্টি কাড়ে পুলিশের উপর মহলের। এই করোনা দুর্যোগে পুলিশ যেখানে দিনরাত কাজ করছে, সেখানে এ ধরণের পরিস্থিতিতে পুলিশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে।

সোমবার (২৩ মার্চ) বিকেলে জেলা পুলিশ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকে পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, কোয়ারেন্টাইন নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠার পর গত ১৯মার্চ বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে তিনি অষ্টগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আজিজুল হককে নির্দেশ দেন। এএসপি আজিজুল হক দ্রুত সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির তদন্ত করে একদিন পরেই প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশের চাঁদা দাবির ঘটনাটি মিথ্যা বলে প্রমানিত হয়। তাছাড়া পুলিশের ভাবমূর্তি ও কাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই এমন ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করা হয় বলে পুলিশ মনে করছে।

তিনি বলেন, এরপর পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নেয়। তাকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় আর কারা জড়িত, কী কারণে তিনি এ ভিডিও ছেড়েছেন তার তদন্ত হচ্ছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।


রুমন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়