ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

মাছ চাষের জন্য পুকুরে বিষ: পানি খেয়ে ১১ গরুর মৃত্যু

জেলা সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৪৬, ২৯ মার্চ ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাছ চাষের জন্য পুকুরে বিষ: পানি খেয়ে ১১ গরুর মৃত্যু

সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে মাছ চাষের আগে বিষ দিয়ে পুকুর প্রস্তুত করায় সেটির পানি খেয়ে আধাঘন্টা ব্যবধানে ১১ টি গরুর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

রোববার সকালের দিকে উপজেলার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের সুতারগাঁও গ্রামে এ গরুগুলোর মৃত্যুর পর করোনাভাইরাসের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন স্থানীয়রা।

খবর পেয়ে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা ও পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুকুরের পানি সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন।

উপজেলার সুতারগাঁও গ্রামের মাঠে পড়ে আছে সুতারগাঁও গ্রামের দিগেন্দ্র দাসের তিনটি, দিলিপ দাসের দুইটি এবং শিশির মোহন দাস, তিলক মোহন দাস, হরিলাল দাস, রায় মোহন দাস, পিন্টু দাস ও চাতলপাড় গ্রামের নজির খানের একটি করে মোট ১১ টি গরু।

স্থানীয়রা জানান, পার্শবর্তী চাতলপাড় গ্রামের আনিস উল্লার পুত্র আবু সালাম সরকারি জায়গার ছোট ছোট ডোবা দখল করে মাছ চাষ করে আসছেন। কিছুদিন আগে রাস্তায় মাটি ভরাটের ফলে একটি গর্ত হয়, সেখানে বৃষ্টির পানি জমে পুকুরের মতো হলে তা দখলে নিয়ে তাতে মাছের রেনু ফেলার জন্য গতকাল শনিবার (২৮ মার্চ) বিষ প্রয়োগ করেন। প্রতিদিনের মতো রোববার সকালে গ্রামের পঞ্চায়েতি তিনজন রাখাল বিভিন্ন মালিকের প্রায় অর্ধশতাধিক গরু নিয়ে ঘাস খাওয়ানোর জন্য মাঠের দিকে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে বিষ প্রয়োগ করা ডোবার পানি পান করে কয়েকটি গরু। পানি পান করার কিছুক্ষনের মধ্যেই গরুগুলো লাফাতে লাফাতে মাটিতে পড়ে মারা যায়।

চাতলপাড় গ্রামের সুজন খান বলেন, গরু মারা যাওয়ার দৃশ্য দেখে রাখালরা চিল্লাচিল্লি শুরু করলে গ্রামের লোকজন দৌড়াদদৌড়ি শুরু করে। করোনাভাইরাসে হাওরে একের পর এক গরু মারা যাচ্ছে শুনে সবার মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। গ্রামের মহিলারা বাচ্চাদের ঘরে আটকে রেখে দরজা জানালা বন্ধ করে দেন।

মাছ ছাড়ার জন্য পুকুর প্রস্তুতের কথা স্বীকার করে আবু সালাম বলেন, গ্রামের পঞ্চায়েতের আদেশে রাস্তার জন্য  মাটি তুলে পুকুরটি আমি শুকিয়ে দিয়েছি, তাদের অনুমতি নিয়েই সেখানে মাছের পোনা উৎপাদনের জন্য চুন প্রয়োগ করা হয়েছে, কোন ধরনের বিষ দেয়া হয়নি।

দিরাই উপজেলা পানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এফ এম বাবরা হ্যামলিন বলেন, গরুগুলো কি কারণে মারা গেছে, তা সঠিক করে বলা সম্ভব হচ্ছেনা। নমুনা সংগ্রহ করে টেষ্টের জন্য পাঠাবো, রিপোর্ট আসার পরই তা বলা যাবে। তবে ধারণা করছি, গরু গুলো বিষক্রিয়ার কারণেই মারা গেছে।

দিরাই উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শরিফুল আলম বলেন, পুকুরের পানি সংগ্রহ করা হয়েছে। তাতে বিষ দেয়া হয়েছে কিনা তা জানার জন্য ল্যাবে পাঠানো হবে। রিপোর্ট আসলেই নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এ ব্যাপারে দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম নজরুল বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, যেহেতু ১১টি গরুর মৃত্যুর ধরন এক রকম, তাই মৃত দুটি গরু ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হচ্ছে। রিপোর্ট আসার পরই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সুনামগঞ্জ/আল আমিন/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়