‘আমরা কাজ না করলে পরিবার না খেয়ে থাকে’
জয়পুরহাট সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম
এই করোনা পরিস্থিতিতেও জয়পুরহাট শহরের বাটার মোড়ে কাজের সন্ধানে অপেক্ষা করছিলেন কয়েকজন নির্মাণ শ্রমিক।
এমন পরিস্থিতিতেও কেন ঘরের বাইরে- জিজ্ঞেস করতেই একজন বললেন, ‘বেঁচে থাকার তাগিদেই ঘর থেকে বের হতে বাধ্য হই। আমরা কাজ না করলে পরিবার না খেয়ে থাকে। কোনো সাহায্যও মেলেনি যে দুদিন ঘরে বসে খাব।'
করোনার এ ভয়াবহ সময়ে প্রশাসনের কড়া নজরদারির মধ্যেও মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) সকাল ৮টায় বাটার মোড়ে বসেছিলেন তারা।
তারা জানান, করোনার এ পরিস্থিতিতে কোনো দিন কাজ মিলছে, কোনো দিন মিলছে না। তারপরও কাজের সন্ধানে এখানে এসে প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ভিড় জমান। এ জন্য মাঝে মধ্যে পুলিশের তাড়াও ভাগ্যে জোটে তাদের।
জয়পুরহাট পৌরসভার বাগিচাপাড়া মহল্লার ষাটোর্ধ শ্রমিক ওমর আলী জানান, ছয় সদস্যের পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। রাজমিস্ত্রীর কাজ করেই সংসার চলে তার। তাই বাধ্য হয়ে প্রতিদিনই কাজের সন্ধান করতে হয়। এছাড়া এখন পর্যন্ত কোনো সহযোগিতাও পাননি বলেও অভিযোগ তার।
পাঁচুর চক মন্ডলপাড়া থেকে আসা রাজমিস্ত্রী আজাদ রহমান বলেন, ‘শুনেছি ত্রাণ দেওয়া হয় কিন্তু আমরাতো পাচ্ছি না।'
জেলার ধলাহার ইউনিয়নের বিষ্ণপুর গ্রাম থেকে আসা নারী শ্রমিক কুলসুম বেওয়া বলেন, ‘স্বামী মারা যাওয়ার পর শ্রমিকের কাজ করে সন্তানদের নিয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। এখন সবদিন কাজ পাই না। কাজ না পেলে চলব কি করে। চেয়ারম্যান মেম্বাররা ত্রাণ দিচ্ছেন তাদের পছন্দের মানুষদের। তাদের তালিকায় আমার নাম নেই।'
একই অভিযোগ কাজের সন্ধানে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা অন্যান্য শ্রমিকদেরও।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন চন্দ্র রায় বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সচেতনতার পাশাপাশি খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম চলছে। চেষ্টা করছি, এ দুর্যোগে সকল কর্মহীন দরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা দেওয়ার।’
দেশের এই বিপদ মুহূর্তে সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
শামীম/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন