ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

লোকসানের শঙ্কা চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিদের

জাহিদ হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৩৬, ১ মে ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লোকসানের শঙ্কা চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমচাষিদের

আমের জেলা হিসেবে খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা পরিস্থিতিতে এবার আম নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

এখন এই সময়ে আম গাছগুলোতে মাঝারি সাইজের আমের গুটিতে ভরপুর। ফলন নিয়ে হতাশার পাশাপাশি করোনার প্রভাবে বাজারের পরিস্থিতি ভালো থাকবে কি না, তা নিয়েই হতাশায় রয়েছে। এতে চলতি মৌসুমে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারে আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় আমবাগানের পরিমাণ ৩৩ হাজার ৩৫ হেক্টর। গত বছর ছিল ৩১ হাজার ৮২০ হেক্টর এবং গাছের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩০টি।

জৈষ্ঠ্য মাসে বাজারে উঠতে শুরু করবে পাকা আম। জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হওয়ায় এই আমকে ঘিরেই এ অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকা অনেকটা নির্ভর করে। কিন্তু করোনার কারণে এবার চাষিদের মুখে হাসি নেই। ব‌্যবসায়ীরাও আছেন দুশ্চিন্তায়।

আম ব্যবসায়ী আব্দুল কাইউম বিশ্বাস জানান, চলতি বছর গাছে গাছে আম পর্যাপ্ত হলেও আমের বাজার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন বাগান মালিকরা। আম মৌসুম জুড়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়। এতে চাঙ্গা হয় জেলার অর্থনীতি। মৌসুমের শুরু থেকেই বাগানের আম বিক্রি হয় এবং কয়েকবার হাত বদলও হয় । কিন্তু এবার করোনার প্রভাবে সবকিছুই গরমিল। আম বাজারজাত না করতে পারার আশঙ্কায় খরচ করে পরিচর্যাও বন্ধ রেখেছেন অনেক চাষি।

কানসাটের আমের আড়তদার সমিতির সভাপতি কাজী এমদাদ বলেন, ‘‘আম বাজারজাতকরণে এবার প্রস্তুতি ভালোই ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে আমের বাজারজাতকরণ ও দাম না পাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন এখানকার আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা।

‘তাছাড়া মৌসুমের এই সময়টাতে কানসাট আমবাজার ও আড়তগুলোতে আমবাগান কেনা-বেচাকে ঘিরে ব্যাপক কর্মচাঞ্চল্য লক্ষ করা গেলেও, এবার কোনো কর্ম-ব্যস্ততা নেই।”

আমবাগান মালিক হারুন অর রশীদ জানান, এবছর আমগাছে আশানুরূপ গুটি এসেছে, বৃষ্টি হওয়ায় আমের জন্য ভাল হয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের ফলন ভালোই হবে। এখন পর্যন্ত পোকার আক্রমণ না থাকায় আমগাছগুলোতে বাড়তি স্প্রে করা লাগছে না। তবে করোনাভাইরাসের জন্য আমের বাজার নিয়ে ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম হতাশা নেমে এসেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, সবকিছু মিলিয়েই ভালো ফলনের আশা করা যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা যাতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নির্বিঘ্নে আম বাজারজাত করতে পারেন সে ব‌্যাপারে তাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এবছর প্রায় পৌনে দুই লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’

আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. জমির উদ্দীন আহম্মদ জানান, আম উৎপাদনে আমচাষিরা যাতে কোনো সমস্যায় না পড়েন, সেদিক বিবেচনা করে বাগান ঘুরে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়