ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ঘূর্ণিঝড় আম্ফান

সাগরে বেড়েছে পানির উচ্চতা, আতঙ্কে উপকূলবাসী

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:২৮, ১৯ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
সাগরে বেড়েছে পানির উচ্চতা, আতঙ্কে উপকূলবাসী

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে সাগল উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৯ মে) দুপুরে সরেজমিন কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের শাহীন বিচ পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায় সাগর উত্তাল রয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিক চেয়ে ৪ থেকে ৫ ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। যা উপকূলের কাছাকাছি বসতিতে গিয়ে আঘাত হানছে। এছাড়াও ঝড়ো বাতাস বয়ে যাচ্ছে।

কক্সবাজার অফিসের আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, সুপার সাইক্লোন আম্ফান কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিমি দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। যেটি মঙ্গলবার (১৯ মে) রাত থেকে বুধবার (২০ মে) দুপুরে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। আর কক্সবাজার সমুদ্র এলাকায় ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা কম বলে জানান তিনি। তবে এর প্রভাবে নিম্নাঞ্চল ৫-১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

এদিকে, কক্সবাজার শহরের সমুদ্র উপকূলবর্তী চরপাড়া, সমিতিপাড়া, নাজিরারটেক, ফদনারডেইল ও কুতুবদিয়াপাড়া এলাকায় সমুদ্রের পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বসতি। যেখানে বসবাস করছে ২০ হাজারের অধিক মানুষ। কিন্তু সেখানে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান নিয়ে প্রচারণা ও মাইর্কিং করতে দেখা যায়নি।

চরপাড়ার বাসিন্দা হাবিব বলেন, সৈকতের পাশে ঝাউবিথীতে সংসার নিয়ে ঝুঁপড়ি ঘরে বসবাস করেন। এখন দেখছেন সাগরে পানির উচ্চতা বাড়ছে। এতে ভয় হচ্ছে। ৬ নম্বর বিপদ সংকেত টিভিতে দেখেছেন। যদি সংকেত আরও বাড়ে তাহলে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাবেন।

এদিকে, আবহাওয়া অফিস ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের বিপদ সংকেত জারির পর সাগরে মাছ ধরার ট্রলারগুলো উপকূলে ফিরেছে। মঙ্গলবার (১৯ মে) সকালে শহরের ফিশারিঘাট, ৬নং জেটি, মাঝিরঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, শত শত মাছ ধরার ট্রলার নোঙর করা রয়েছে। 

৬নং এলাকার টুলু ঘাটে কথা হয় এফবি আল্লাহ দান ট্রলারের মাঝি কাইয়ুমের সঙ্গে। তিনি বলেন, সাগরে থাকতে ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত পান। সাগরে পানির অবস্থাও ভালো না। তাই মাছ শিকার না করে সোমবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় ফিরে আসেন।

আরও পড়ুন: উপকূলের আরও কাছে 'আম্ফান', এগুচ্ছে ২০ কি.মি. গতিতে
জেলা মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন,  ছোট-বড় সবমিলিয়ে ৬ হাজার মাছ ধরার ট্রলার নিরাপদে উপকূলে ফিরে এসেছে। মাত্র অল্প সংখ্যক ট্রলার সাগরে রয়েছে। তাও মঙ্গলবার (১৯ মে) সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসবে।

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে কক্সবাজার জেলার ৮টি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলাসহ সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন১২ ঘণ্টায় ১৮০ কি.মি. এগিয়েছে সুপার সাইক্লোন 'আম্ফান'

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, জেলা-উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দুর্যোগ সংক্রান্ত সভা হয়েছে। জেলার ৫৭৬টি আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১০ হাজারের বেশি  সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে ৫০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ১০ লাখ বরাদ্দ হয়েছে, যা জরুরি প্রয়োজন বিতরণ করা হবে।

আরও পড়ুন: আম্ফান'র চোখ ১৫ কি. মি. বিস্তৃত
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় ৩৪টি আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গারা। ঘূর্ণিঝড় আম্ফান মোকাবিলায় সেখানেও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৭ মে) সেখানে দিনব্যাপী সেনাবাহিনীর মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। 

সেনাক্যাম্পসমূহের তত্ত্বাবধানে প্রায় ১০ হাজার রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায়।


রুবেল/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়