ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতের দায়িত্বে সেনাবাহিনী

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০১:৫৫, ২৩ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতের দায়িত্বে সেনাবাহিনী

ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে খুলনার উপকূলীয় কয়রা উপজেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামতের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার্স কোরের অগ্রগামী টিম ইতোমধ্যে কয়রায় অবস্থান নিয়ে প্রাথমিক কাজও শুরু করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহা জানান, সেনাবাহিনীর সদস্যরা শুক্রবার (২২ মে) থেকে কয়রার মদিনাবাদ মডেল স্কুল, কালনা মাদ্রাসা ও সুন্দরবন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অবস্থান নিয়েছেন। তারা প্রাথমিকভাবে স্থানীয় দক্ষিণ বেদকাশির গোলখালী, সদর ইউনিয়নে হরিণখোলা ও উত্তর বেদকাশির রতনাঘেরি কাটকাটা এলাকায় বাঁধে মাটি, বালু ভরাট কাজ শুরু করেছেন।

কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, কয়রার বাঁধ মেরামতের জন্য ৩শ’ সেনা সদস্য আসার কথা রয়েছে। শুক্রবার থেকে অগ্রগামী টিম কয়রায় অবস্থান নিয়েছে।

খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে কয়েকটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এখনই বাঁধে মেরামত কাজ করতে পারছে না পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। এ কারণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে কয়রায় তিনটি পয়েন্টে বাঁধ মেরামত কাজ করবে সেনাবাহিনী।

খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মো. আকতারুজ্জামান বাবু বলেন,  সেনাবাহিনী বাঁধ মেরামতের কাজ পাওয়ায় মানুষের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। সেনবাহিনীকে উত্তর বেতকাশির গাজিপাড়া ও মহারাজপুর দশালিয়া এলাকার বাঁধ মেরামতের জন্য বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে এখানে প্রায় ৩০ ফুট গভীরতার খালের মতো তৈরি হয়েছে।

২০ মে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের আঘাতে কয়রার জোড়শিং বাজার, গোলখালী, গাজীপাড়া, ঘাটাখালীসহ ১১টি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে  বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও ঘরবাড়ী প্লাবিত হয়। এতে নদীতে জোয়ারের সময় লবণ পানি থেকে জমির ফসল রক্ষায় স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ নেয় ক্ষতিগ্রস্তরা।

কয়রার দক্ষিণ বেতকাশি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামছুর রহমান জানান, বেড়িবাঁধের নাজুক অবস্থা সম্পর্কে আগেই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা গুরুত্ব না দেওয়ায় ভাঙনে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রতিবছর যেনতেনভাবে বাঁধ সংস্কারের নামে টাকা লুটপাট হয়। কিন্তু টেকসই বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় দুর্যোগ এলেই আতঙ্কে থাকে এখানকার মানুষ।

তবে অর্থবরাদ্দ না থাকায় গত কয়েকবছরে বাঁধ সংস্কারে বড় ধরনের কোনো কাজ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন পাউবো, খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী। তিনি বলেন, কয়রা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে প্রায় ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প দেওয়া হলেও এখনো তা অনুমোদন হয়নি। একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ে এখানকার প্রায় ৯০ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অমাবশ্যা ও বর্ষা মৌসুম সামনে থাকায় ক্ষতি এড়াতে কয়েকটি পয়েন্টে জরুরিভিত্তিতে বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


খুলনা/নূরুজ্জামান/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়