ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

আম্ফানের পর থেকে অনেক এলাকা এখনো বিদ্যুৎহীন

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩৫, ৩০ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
আম্ফানের পর থেকে অনেক এলাকা এখনো বিদ্যুৎহীন

চার্জের জন্য জেনারেটরের দোকানে রাখা মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী

আম্ফান তাণ্ডবের ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও সাতক্ষীরা সদর, তালা, কলারোয়া, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় এখনো পল্লী বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এতে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক যন্ত্র সচল রাখতে চার্জ করার জন্য জেনারেটরের দোকানে ভিড় করছেন সাধারণ মানুষ। এই সুযোগে কেউ কেউ ভ্যানযোগে জেনারেটর এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নিয়ে ভ্রাম্যমান পদ্ধতিতে চার্জ দিয়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ আবার জেনারেটর ভাড়া নিয়ে নিরবে চার্জ দেয়ার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় কথা বলে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে গত ২০ মে থেকে সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ বিছিন্ন হয়ে যায়। অনেক স্থানেই এখনো এসব সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েই আছে। আম্ফানের পর সরকারি দফতরগুলোতে সীমিত আকারে পল্লী বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হলেও বাড়িঘর ও বেসরকারি প্রায় সব প্রতিষ্ঠান এখনও বিদ্যুৎবিহীন। এই পরিস্থিতিতে ডিজেলচালিত জেনারেটর দিয়ে বিভিন্ন ইলেকট্রিক যন্ত্রের ব্যাটারি চার্জ দিচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর এলাকার গৃহবধূ বিলকিস নাহার রত্না ও জাহাঙ্গীর আলম জানান, তাদের গ্রামসহ আশেপাশের এলাকায় বিদ্যুতের অনেক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। তার ছিঁড়ে গেছে বহু জায়গায়। গত ১০ দিনেও সেখানে বিদ্যুতের দেখা নেই।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার তলুইগাছা গ্রামের আব্দুল জলিল জানান, সদর উপজেলার তলুইগাছা, বাঁশদহ, ভবানীপুর, কুশখালী, কাথন্ডা ও বৈকারী এলাকায় এখনো পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

আব্দুল জলিল জানান, জেনারেটর থেকে চার্জ দিতে হলে প্রতিটি বাটন মোবাইল ফোন ১০, টাচ মোবাইল ফোন ২০ টাকা, টর্চলাইট ২০ টাকা ও ল্যাপটপ চার্জ দিতে ৪০ টাকা দিতে হচ্ছে জেনারেটর ব্যবসায়ীদের।

তিনি জানান, জেনারেটরে চার্জ দিলে ভোল্টেজ আপডাউনের কারণে অনেকের আবার মোবাইলসহ ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি নষ্টও হচ্ছে।

কলারোয়া উপজেলার কাকডাঙ্গা বাজারের মোখলেছুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে তাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার উপর বাড়িতে নেই বিদ্যুৎ। নেই আয়ের উৎস। তার উপর মোবাইল ফোন ও ইলেকট্রিক যন্ত্রপাতি চার্জ দিতে প্রতিদিন প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা খরচ হচ্ছে। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা।

তিনি জানান, কাকডাঙ্গা বাজারের শফি ডেকোরেটার তার নিজের দোকানে জেনারেটর দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন ব্যাটারিতে চার্জ দিচ্ছেন। এলাকার বিভিন্ন লোক লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন চার্জের জন্য। একই অবস্থা কলারোয়া উপজেলার বোয়ালিয়া মোড়, ফকিরপাড়ার মোড়, শাকদাহ, যুগিখালী, বুইতা, মাদরা, গয়ড়া, বুঝতলাসহ বিভিন্ন এলাকায়।

সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডি.জি.এম (কারিগরী) প্রকৌশলী  মাসুম আহম্মেদ  জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে সাতক্ষীরা  জেলায় ১ হাজার ৭৮২টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। তার ছিঁড়ে গেছে বহু জায়গায়। এই পরিস্থিতিতে সাতক্ষীরার প্রতিটি উপজেলায় বিদ্যুৎ লাইন সংস্কারের কাজ চলছে। তবে কলারোয়া উপজেলায় সব থেকে বেশি বিদ্যুৎ লাইনে ক্ষতি হয়েছে।

দুই এক দিনের মধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে বলে জানান তিনি ।

 

শাহীন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়