ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নতুন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন রাকিবুল

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১২, ৩০ মে ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
নতুন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন রাকিবুল

নতুন জীবনের স্বপ্ন নিয়ে চার মাস আগে বাড়ি ছেড়েছিলেন যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার খাটবাড়িয়া গ্রামের রাকিবুল ইসলাম (২০)। দালালের মাধ্যমে তিনি পাড়ি দেন লিবিয়ায়। কিন্তু দালাল চক্র লিবিয়ার একটি শহরে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন শুরু করে। রাকিবুলের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করে মুঠোফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে মানবপাচারকারীরা। রাকিবুলের পরিবার টাকা দিতে রাজিও হয়। এরইমধ্যে খবর আসে রাকিবুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।

গৃহযুদ্ধকবলিত দেশ লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় মিজদা শহরে বৃহস্পতিবার ২৬ বাংলাদেশিসহ ৩০ অভিবাসীকে খুন করা হয়। তাদেরই একজন এই রাকিবুল।

রাকিবুলের বড় ভাই সোহেল রানা বলেন, ‘উন্নত জীবনের আশায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দেশ ছেড়েছিল রাকিবুল। ভালো কাজের জন্য দালালের মাধ্যমে তাকে লিবিয়ায় পাঠানো হয়। কিন্তু শুরু থেকেই দালালেরা তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে থাকে। পরে তাকে আটকে রেখে ১৭ মে মুঠোফোনে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দালালরা। ওই টাকা দুবাই থেকে নিতে চায় তারা। ভাইয়ের মুক্তির জন্য ওই টাকা দিতে রাজিও হয়েছিলাম। তাদের কাছ থেকে ১ জুন পর্যন্ত সময় নিয়েছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে কী হয়ে গেল কিছুই বুঝতে পারলাম না। চাচাতো ভাই ফিরোজ ২৯ মে শুক্রবার সকালে লিবিয়া থেকে ফোন করে জানিয়েছে, যে ২৬ বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তার মধ্যে রাকিবুলও রয়েছেন।’

তিনি আরো বলেন, সোহেল রানা বলেন, ‘আমরা এখন কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না। লাশ কবে দেশে আসবে, তা–ও জানি না ।’

রাকিবুলের মৃত্যুর খবরে কাঁদতে কাঁদতে বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন তার মা মাহিরন নেছা। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা ইসরাইল জোয়াদ্দার।

শনিবার (৩০ মে) দুপুরে নিহতের বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, রাকিবুল যশোর সরকারি সিটি কলেজে অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন। রাকিবুলের চাচাতো ভাই ফিরোজ গত ৭/৮ বছর ধরে লিবিয়াপ্রবাসী। চাচাতো ভাই লিবিযা যাওয়ার পর তার পরিবারের সচ্ছলতা আসে। তা দেখে রাকিবুল লিবিয়া যাবার সিদ্ধান্ত নেয়। ফিরোজ লিবিয়ায় থাকা আব্দুল্লাহ নামে এক বাংলাদেশি দালালের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাকিবুলকে লিবিয়ায় নিয়ে যান। চার মাস আগে সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ করে রাকিবুলকে লিবিয়ায় পাঠান পরিবারের লোকজন। চার ভাই-বোনের মধ্যে রাকিবুল সবার ছোট।

নিহত বাকিবুলের বাবা-মা-ভাই তার লাশটি পেতে চান। দাফন করতে চান দেশের মাটিতে। এজন্য তারা সরকারের সাহায্য কামনা করেছেন।

 

যশোর/রিটন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়