ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

পরীক্ষায় ভালো করে প্রশংসিত কলসিন্দুরের ফুটবল কন্যারা

মাহমুদুল হাসান মিলন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ২ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
পরীক্ষায় ভালো করে প্রশংসিত কলসিন্দুরের ফুটবল কন্যারা

ফাইল ফটো

নিজেদের সর্বোচ্চ দক্ষতা দেখিয়ে সাফ অনুর্ধ্ব-১৮ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে হারিয়ে প্রথম বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা।

সাফ অনূর্ধ্ব -১৮ বিজয়ী মূল দলের হয়ে মাঠে নৈপূণ্য দেখানো ১১ ফুটবলারের ৯ জনই ময়মনসিংহের কন্যা। আলো ঝলমলে আধুনিক শহরে নয়, গারো পাহাড়ের পাদদেশ ঘেঁষা সীমান্ত উপজেলা ধোবাউড়ার সুবিধাবঞ্চিত গ্রাম কলসিন্দুরে জন্ম নিয়ে সেখানেই বেড়ে ওঠা অতিসাধারণ কন্যারা ফুটবলে অভাবনীয় জয় এনে তাক লাগিয়ে  দিয়েছিলেন। কেবল খেলাধুলাই নয়, এবার এসএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেও নিজেদের যোগ্যতা মেলে ধরেছেন। প্রশংসায় ভাসছেন নিজের পরিবার, শিক্ষক ও ফুটবলপ্রেমীদের কাছে।

সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ নারী চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা বিজয়ী ফুটবলারদের মধ্যে মারিয়া মান্ডা, তহুরা খাতুন, সাজেদা খাতুন, শামসুন্নাহার, শিউলি আজিম, নাজমা, মার্জিয়া, সানজিদা আক্তার ও মাহমুদা আক্তার ধৌবাউড়া উপজেলার কলন্দিুরের কন্যা। তারা সবাই কলসিন্দুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।

২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জাতীয় দলের দুইজনসহ ৫ জন কলসিন্দুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছে। এছাড়াও এইচএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের অধিনায়ক মারিয়া মান্ডাসহ আরও ৪ জন।

জাতীয় দলের দুই ফুটবলার শামসুন্নাহার (সিনিয়র) পাস করেন ৩.০৬ পয়েন্ট নিয়ে ও সাজেদা আক্তার পাস করেন ২.৫৬ পয়েন্ট নিয়ে। এছাড়াও কলসিন্দুর ফুটবল টিমের আরও তিন সদস্য এসএসসি পাস করেন- তারা হলেন, ময়না ২.৬১, সিতা ২.৮৩, পুর্ণিমা ২.৫৬ উত্তীর্ণ হন।

কথা হয় জাতীয় দলের ফুটবলার শামসুন্নাহারের সাথে। তিনি বলেন, ‘রেজাল্টটা আরো ভালো হলে ভালো লাগতো। খেলাধুলায় সময় বেশি দেয়ার কারণে ঠিকমত পড়াশোনা করতে পারিনি। তবে, বড় কথা হচ্ছে আমাদের পরিবার ও শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের কথা রাখতে পেরেছি। কারণ আমরা খেলায় বেশি মনোযোগী হয়ে যাওয়ায় আমাদের বাবা-মা ও স্কুলের শিক্ষকগণ চেয়েছিলেন খেলাধুলার পাশাপাশি যেন লেখাপড়াটাও চালিয়ে যাই।'

এদিকে কলসিন্দুর কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের আরো ৫ জন। তারা হলেন- মারিয়া মান্ডা, সানজিদা আক্তার, শিউলী আজিম, নাজমা ও কল্পনা।

এইচএসসি পরীক্ষায় কেমন প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে মারিয়া মান্ডা বলেন, ‘আশাবাদী যে পাস করব। তবে, ভাল রেজাল্ট করতে পারব কিনা জানি না।'

দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।

করোনা ভাইরাসের কারণে জাতীয় দলের নারী ফুটবলাররা এখন নিজ নিজ বাড়িতে রয়েছেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন। এত দীর্ঘ সময় খেলার বাইরে থাকতে হবে তারা তা ভাবেননি। তবে খেলাধুলা বন্ধ থাকায় মা বাবার সাথেই সময় কাটাচ্ছেন তারা।

কলসিন্দুর স্কুল এন্ড কলেজের সহকারী অধ্যাপক মালা রানী সরকার বলেন, ‘কলসিন্দুর স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও জাতীয় দলের নারী ফুটবলাররা খেলাধুলার পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে এটা আমাদের খুব ভালো লাগছে। আমরা আশাবাদী যে নারী ফুটবলারদের ভবিষ্যতের দিকেও খেয়াল রাখবেন সরকার।'

ময়মনসিংহ জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন এর সভাপতি একেএম দেলোয়ার হোসেন মুকুল বলেন, ‘ ওরা খেলাধুলার পাশাপাশি লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ায় আমরা গর্বিত। ময়মনসিংহ ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে তাদের অভিনন্দন জানাই।'


ময়মনসিংহ/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়