ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

করোনা চিকিৎসায় টেকনাফে প্রথম ৬০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার

কক্সবাজার প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৪, ২১ জুন ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
করোনা চিকিৎসায় টেকনাফে প্রথম ৬০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার

করোনা রোগীদের সুবিধার্থে দেশের সর্বদক্ষিণের উপজেলা টেকনাফে অবশেষে চালু হয়েছে ৬০ শয্যার আইসোলেশন এবং ট্রিটমেন্ট সেন্টার। যেখানে স্থানীয় জনগোষ্ঠী বা রোহিঙ্গা কোভিড-১৯ সন্দেহভাজন বা কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে পারবেন।

ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি সহায়তায় টেকনাফের শামলাপুরে নির্মিত এই আইসোলেশন সেন্টারটি রোববার দুপুরে উদ্বোধন করেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার।

এসময় উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, ক্যাম্প-২৩ ইনচার্জ পুলক কান্তি চক্রবর্তী, আই.আর.সির কান্ট্রি ডিরেক্টর মানীষ কুমার আগরাওয়াল।

আইআরসি কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার শুরু হলে বাংলাদেশ সরকারকে করোনা মোকাবিলায় সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসে ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি (আই.আর.সি)। এপ্রিল মাস থেকেই আই.আর.সির ১০ সদস্য বিশিস্ট একটি চিকিৎসক দল কক্সবাজার জেলার রামু সরকারী আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় টেকনাফের শামলাপুরে ৬০ শয্যা বিশিষ্ট সারি আইশোলেশন এবং ট্রিটমেন্ট সেন্টার নির্মাণ করল প্রতিষ্ঠানটি। এই চিকিৎসা কেন্দ্রটি স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহনের মাধ্যমে তাদের সকল সুযোগ-সুবিধার কথা বিবেচনা করে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখানে এক সঙ্গে ৬০ জন কোভিড-১৯ সন্দেহভাজন বা কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তি চিকিৎসা নিতে পারবে।

৬০ জনের একটি দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীর দল দিবা-রাত্রি ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা সেবা দিবে। রোগীদের জন্য প্রতিটি বেডের সাথে রয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের ব্যবস্থা, নারী এবং পুরুষের জন্য আলাদা ওয়ার্ড, সন্দেহভাজন এবং আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য পৃথক ওয়ার্ড, তিনবেলা খাবার এবং ওষুধ সরবরাহের ব্যবস্থা, করোনা আক্রান্ত প্রসূতি মায়েদের জন্য বিশেষ সেবা ও ২৪ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস। এছাড়াও সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে এখানে রয়েছে ডব্লিউএইচও নির্দেশনা অনুয়ায়ী জীবাণুমুক্তকরণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।

উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মাহবুব আলম তালুকদার বলেন, এটা টেকনাফের প্রথম আইসোলেশন সেন্টার যা নি:সন্দেহে টেকনাফবাসীর জন্য একটা বিশেষ মূহুর্ত। আশাকরি, এই চিকিৎসাকেন্দ্রের মাধ্যমে টেকনাফের স্থানীয় অধিবাসী এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী জন্য কভিড-১৯ চিকিৎসা সহজলভ্য হবে এবং বেশ কিছু জীবন বাঁচবে।

এই প্রসঙ্গে আই.আর.সি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মানীষ কুমার আগরাওয়াল বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমন এক কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, তাই সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া এর মোকাবিলা কঠিন। সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। এই আইশোলেশন এবং ট্রিটমেন্ট সেন্টারটি এরকম অনেকগুলো উদ্যোগের একটি। আমাদের বিশ্বাস আমরা বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী স্থানীয় বাংলাদেশী এবং রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে ভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে পারবো।

আই.আর.সি বাংলাদেশের ডেপুটি প্রোগ্রাম ডিরেক্টর শাহ মুনতামিন মুজতবা বলেন, গত মার্চ মাসের শুরু থেকেই আই.আর.সির মেডিকেল এবং অন্যান্য দল নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা এই সময়ও আমাদের অন্যান্য হাসপাতালে প্রাথমিক এবং মাতৃ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে এসেছি। এছাড়াও কোভিড সংক্রমন রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, সুরক্ষা সামগ্রী বিতরন, মানসিক সমস্যার পরামর্শ প্রদান ইত্যাদি নানকার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। আমরা ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে কভিড-১৯ এর ঝুঁকি থেকে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং রোহিঙ্গাদের রক্ষা করার জন্য আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাবো।



কক্সবাজার/সুজাউদ্দিন রুবেল/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়