ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঘর ছেড়ে ব্রিজের নিচে

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ৩ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
ঘর ছেড়ে ব্রিজের নিচে

ভবঘুরে জীবন। এ-ঘাটে ও-ঘাটে জীবন তরী ভেসেছে এতো কাল। সেই তরী এবার ভিড়েছে কুষ্টিয়ার সাগরখালী নদীর ওপর নির্মিত ব্রিজের নিচে। 

আবু তৈয়ব বাড়ি ছেড়েছেন ২৭ বছর আগে। তার ভাষায় ‘সংসার আমার জন্য না। ঘুরে বেড়াতেই ভালো লাগে।’ এই ভালো লাগায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন পরিবারের লোকজন। রাগে-দুঃখে একদিন কাউকে না জানিয়েই ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন তিনি। এরপর অবশ্য বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কিন্তু বাড়িতে তিনি আর স্থায়ী হননি।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে আবু তৈয়ব কুষ্টিয়া জেলায় আসেন গত দেড় বছর আগে। ব্রিজের নিচে টিনের ছাপড়া ঘর তুলে আছেন প্রায় চারমাস। কথায় কথায় জানা গেল তার ভক্তের সংখ্যাও কম নয়। ঘর তৈরির টাকা ভক্তদের কাছ থেকেই পেয়েছেন তিনি।

আবু তৈয়ব পেশায় কবিরাজ। ‘এক পেট কোনো মতে চলে যায়’ জানিয়ে বলেন, ‘খুব বেশি রান্না করার চিন্তা করতে হয় না। অনেকেই এসে খাবার দিয়ে যান।’ এই অনেকের একজন ব্রিজের পাশের খামারপাড়ার জিহাদ। তিনি বলেন, পাগলা (আবু তৈয়ব) আমাকে ভাই ডাকে। আমার বাবাকে বাবা ডাকে। এজন্য তার সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে গেছে। কেউ নাই তার। আমরাই দেখেশুনে রাখি।’

কথা বলে জানা যায়, আবু তৈয়বের জীবনের অধিকাংশ সময় কেটেছে দেশের বিভিন্ন মাজারে। নিজেই বললেন, এক সময় তিনি মিরপুরের উড়িষ্যার বাবার দরবারে থেকেছেন। এর আগে থেকেছেন চুয়াডাঙ্গা।  এক জায়গায় বেশিদিন থাকেন না কেন? আবু তৈয়ব বলেন, ‘বেশিদিন থাকতে ভালো লাগে না। মায়া জমে যায়। সংসারে মায়া বড় খারাপ জিনিস! তাছাড়া একা থাকলে যা মনে চায় তাই করা যায়।’

ইচ্ছে স্বাধীন চলতে পছন্দ করেন আবু তৈয়ব। তার গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রাম। বাড়ি ফিরে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভালোই তো আছি!’

 

কাঞ্চন কুমার/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়