ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে আবার বাড়ছে ধরলার পানি, বাঁধে ভাঙন

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২২, ৩ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
কুড়িগ্রামে আবার বাড়ছে ধরলার পানি, বাঁধে ভাঙন

কুড়িগ্রামে আবারও ধরলা নদীর পানি বেড়েছে, বাঁধে ভাঙন শুরু হয়েছে। চিন্তায় পড়েছেন বন্যা কবলিত মানুষেরা।

স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ‌্যা ৬টায় ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে গত ২১ ঘণ্টা ব্যবধানে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৬ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি সামান‌্য কমে চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪২ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, মূলত উজানের এবং স্থানীয় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে ধরলার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। আর ভারী বৃষ্টিপাত না হলে ধরলার পানি আর তেমন বাড়বে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বিপৎসীমার ওপর থাকা অবস্থায় আগামী ৩ থেকে ৪ দিন পর পানি আরও বৃদ্ধি পাবে।

এ অবস্থায় ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়ি থেকে বন্যার পানি না নামতেই আবারও পানি বৃদ্ধি শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানকার মানুষের জন‌্য। এমনিতেই এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে পানিবন্দি হয়ে থাকা মানুষরা খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে রয়েছে। বন্যা যদি আরো দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে চরম খাদ্য সংকটে পড়তে হবে বানভাসী মানুষদের।

উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের প্রায় সাড়ে তিন হাজার পরিবার প্রায় এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দি জীবন-যাপন করছে। এদের মধ্যে কর্মজীবী পরিবারগুলোর হাতে কোন কাজ না থাকায় খাদ্য সংকট তীব্র হচ্ছে। এই সাড়ে তিন হাজার পরিবারের মধ্যে মাত্র সাড়ে ৩০০ পরিবারকে সরকারি খাদ্য সহায়তা দেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। এ অবস্থায় বন্যা যদি আরও দীর্ঘায়িত হয় তাহলে চরম সংকটে পড়বে বন্যা কবলিত মানুষেরা। 

অন্যদিকে ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়া-কমার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রাপুর ইউনিয়নের গারুহারা, বলদিয়া গ্রামসহ নদ-নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে নদী ভাঙন। এই ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ঘর-বাড়ি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মাইনুদ্দিন ভোলা জানান, যাত্রাপুর ইউনিয়নের বলদিয়া এলাকায় গত কয়েক দিনের ভাঙনে চরম দুর্ভোগে রয়েছে ঘর-বাড়ি হারানো কয়েকটি পরিবার। একদিকে বন্যা অন্যদিকে ভাঙন তারা অবর্ণনীয় কষ্টে দিন পার করছে।

ধরলা নদীর ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে। এই বাঁধের প্রায় ৪০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নদী তীরবর্তী প্রায় ২০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মো. রেজাউল করিম জানান, জেলার বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ৩০২ মেট্রিক টন চাল ও ৩৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে আরো ১০০ মেট্রিক টন চাল ও শুকনো খাবারের জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।


কুড়িগ্রাম/বাদশাহ্ সৈকত/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়