ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নীলফামারীতে তিস্তার পানি এ বছরে সর্বোচ্চ ওপরে: চরাঞ্চলে বন্যা

নীলফামারী সংবাদদাতা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩১, ৪ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
নীলফামারীতে তিস্তার পানি এ বছরে সর্বোচ্চ ওপরে: চরাঞ্চলে বন্যা

ভারী বৃস্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা এ বছরে সর্বোচ্চ। তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে পুনরায় তৃতীয় দফায় তিস্তার চরাঞ্চলের বন্যা ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি সকাল থেকে তিস্তা অববাহিকায় মুষলধারে বৃস্টি চলছে।

আজ শনিবার নীলফামারীর ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সর্তকীকরণ কেন্দ্র জানায়, সকাল ৬টায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার (৫২.৬০) ২২ সেন্টিমিটার ( ৫২ দশমিক ৮২ ) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে সকাল ৯টায় ৪ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। এর আগে চলতি বছরের বর্ষা মৌসুমে তিস্তা নদীর পানি সর্ব প্থম গত ২০ জুন বিপৎসীমার ওপরে উঠে। যা পরেরদিন ২১ জুন সকালে নেমে যায়। এর ৬ দিনের মাথায় ২৬ জুন তিস্তা নদীর পানি দ্বিতীয় দফায় পুনরায় বিপৎসীমা অতিক্রম করে ২০ সেন্টিমিটার উপরে উঠে ২৮ জুন সকালে পানি নেমে যায়।

তৃতীয় দফায় উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে সৃস্ট বন্যার পানি সামাল দিতে খুলে রাখা হয়েছে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট। এদিকে তিস্তার বন্যায় জেলার ডিমলা উপজেলার ছয় ইউনিয়নের বসত ঘরগুলোতে হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। তিস্তার চরাঞ্চলের মধ্যে খগাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের কিছামত ছাতনাই ও ঝুনাগাছচাঁপানী ইউনিয়নের ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ি ও ফরেষ্টের চরের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে বলে ওই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা জানাস।

এদিকে ডিমলা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা জানান, তিস্তার বন্যায় ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, খালিশ চাঁপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের তিস্তা অববাহিকার ১৫টি চর ও গ্রাম তিস্তার বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ওই সকল এলাকায় বসবাসকারীদের নিরপদ উঁচু স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আজ নতুন করে আরও টেপাখড়িবাড়ি ও খালিশাচাঁপানী এলাকায় ৪টি পরিবারে বসতঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়েছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছে।

এ ছাড়া কিছামত ছাতনাই গ্রামটি এবারে টিকবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে এলাকাবাসী। সেখানে প্রচণ্ডভাবে তিস্তার ভাঙন শুরু হয়েছে। ৫০ পরিবার নিরাপদে সরেছে। সেখানে প্রায় তিনশত পরিবারের বসবাস।

ডিমলা উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান জানান, তিস্তা নদীর গত দুই দফায় বন্যায় ৬ ইউনিয়নে ৩ হাজার ২৪৫ বন্যা কবলিত পরিবারকে সরকারিভাবে ১৫ কেজি করে চাল, শুকনা খাবার ও তিস্ত নদী ভাঙনে বসতভিটা হারানো ৭৫ পরিবারের মাঝে ২ হাজার করে নগদ টাকা দেওয়া হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, তিস্তা নদীর পানি সকাল ৯টা হতে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।

অপর দিকে ডিমলা উপজেলার নাউতারা নদীর দুই ধারে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ৬টি পয়েন্টে ওই নদীর ভাঙনে এরমধ্যে প্রায় ৫০ বিঘা আবাদী জমি বিলিন হয়েছে। এ ছাড়া এলাকাবাসীর চলাচলের জন্য নদীর ওপর যে কাঠের সাঁকো তৈরী করেছিল, তা নদীর পানির স্রোতে ভেঙ্গে পড়েছে।

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায় সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শন করে জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কাজ চলছে।


নীলফামারী/ইয়াছিন মোহাম্মদ সিথুন/সাজেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়