থানচিতে এক সেতুতে ৯ মাসে দুই বার ভাঙন
এস বাসু দাশ || রাইজিংবিডি.কম
বান্দরবানে থানচি উপজেলায় নয় মাসের মধ্যে একটি সেতু দুই বার ভেঙে গেছে। এতে স্থানীয়দের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ও ঠিকাদার সংস্থা দুর্নীতি, অনিয়ম করে নিম্ন মানের কাঁচামাল ব্যবহার করে সেতু নির্মাণ করেছে।
সদর উপজেলা থেকে দেড় কিলোমিটার দূরত্বে ছাংদাক পাড়া যাওয়ার সড়কে কয়েকটি সেতু নির্মাণ করা হয়। নিম্ম মানের কাঁচামাল ব্যবহার করে সেতু নির্মাণ করায় গত নয় মাসে দুই বার একটি সেতু ভেঙে গেছে। এ সেতু দিয়ে জিনিংঅংপাড়া, শাহজাহান পাড়া, তংক্ষ্যং পাড়া, হাবরু হেডম্যান পাড়া, ছাংদাক পাড়াসহ অর্ধশতাধিক পাড়ার লোকজন যাতায়াত করে। দৈনিক ৫ শতাধিক মানুষ সেতু দিয়ে চলাচল করে। সেতুর মাঝখানে ভেঙে যাওয়ায় জুম চাষিদের উৎপাদিত ফসল পরিবহনে সমস্যা হচ্ছে। আম, কাজুবাদাম, মার্ফা, আদা, হলুদ, কলা সময়মতো বাজারজাত করতে না পাড়ায় সেগুলো পঁচে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে ছাংদাক পাড়ার বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগের নেতা উবামং মারমা বলেন, ‘ভারি যানবাহন চলাচলের কারণে সেতুটি ভেঙে পড়েছে। কিন্তু সংস্কারের জন্য অনেকবার বলা হলেও সংশ্লিষ্টরা আমাদের কথা শোনেননি।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে টিআর, কাবিখা, কাবিটা, ছাড়াও বান্দরবানে জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রামে বিভাগীয় কমিশনার, পার্বত্য জেলা পরিষদ ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে প্রয়োজনীয় সেতু, কালভার্ট, রাস্তা ঘাট, স্কুল, কলেজ সংস্কার জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা বরাদ্ধ দিলেও সংস্কার করা হয়নি ভেঙে যাওয়া সেতু।
থানচি সদর ইউপি মহিলা সদস্যা ডলিচিং মারমা বলেন, ‘গত নয় মাস আগে একবার সেতুটি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আদেশে সেতু সংস্কার করা হয়েছিল। আবার একই স্থানে ভেঙে গেছে।’
স্থানীয়দের অভিযোগ উঠেছে, থানচিতে যেখানে মানুষের যাতায়াত কম সেখানে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। থানচি সদর থেকে ছাংদাক পাড়া যাওয়ার অভ্যন্তরীণ সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ হলেও সেটিও সংস্কারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
থানচি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় (পিআইও) এর সূত্রে জানা যায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে সদর উপজেলা থেকে ছাংদাক পাড়া যাওয়ার সড়কে গত কয়েক বছর মধ্যে ৩টি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিটিতে ২৭ লাখ টাকা করে মোট ৮১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে । নির্মাণ শতভাগ বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। যে সেতুটি ভেঙে গেছে সেটি জনসংহতি সমিতির নেতা ও যুব সমিতি সভাপতি নুমংপ্রু মারমা ঠিকাদারকে বাস্তবায়নে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছিল।
স্থানীয় উশৈসিং মারমা নামে একজন বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে যাওয়ার কারণে আমরা কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে পারছি না। চলাচল করতেও সমস্যা হচ্ছে।’
থানচির প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি ভেঙে যাওয়ার খবর আমার জানা নেই। যদি ভেঙে গিয়ে থাকে তবে আমরা সংস্কারের উদ্যোগ নেব।’
বান্দরবান/ইভা
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন