করোনায় কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় খামারিরা (ভিডিও)
জাহিদুল হক চন্দন || রাইজিংবিডি.কম
খামারে লালন পালন করা কোরবানির গরু/ছবি: রাইজিংবিডি
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে মানিকগঞ্জে গবাদিপশুর খামারিদের ব্যস্ততা বেড়েছে। তবে চলতি বছর করোনার প্রভাবে কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে বিপাকে রয়েছেন খামারিরা।
একদিকে, ভারতীয় গরুর আমদানি। অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়াতে লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।
ঢাকার কাছেই এ জেলা হওয়ায় প্রতি বছর গাবতলী হাটের প্রায় ৩০ ভাগ কোরবানির পশু এ জেলা থেকে সরবরাহ করা হয়। চলতি বছর ১৬ হাজার ৫৬৩ জন খামারি ঈদকে সামনে রেখে ৭৭ হাজার ৬৬৫টি কুরবানির পশু লালন পালন করছেন।
এলাকার খামারিরা জানান, চলতি বছর কোরবানির পশু হাটে বিক্রি করা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তারা। জেলার অভ্যন্তরীণ হাটসহ ঢাকার হাটগুলোতে করোনাকালীন বিধি নিষেধ থাকায় পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন খামারিরা।
এছাড়া, করোনার প্রভাব থাকায় হাটের সংখ্যাও কমার সম্ভবনা রয়েছে। এসব কোরবানির পশু হাটে না নিয়ে খামার থেকে বিক্রি করলে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে জানান তারা।
অপরদিকে, অনেকেই আর্থিক অবস্থার কথা চিন্তা করে কম বাজেটে কোরবানির পশু কিনতে আসলে বড় গরুর দাম কমতে পারে। ফলে কোরবানির ঈদে বড় ধরনের লোকসান হতে পারে।
সদর উপজেলার ফ্রেন্ডস ডেইরি ফার্মের পরিচালক রাকিবুল বারী (রাকিব) বলেন, ’করোনার প্রভাবে পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় খরচও হয়েছে বেশি। কিন্তু সামনে কোরবানির ঈদে ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছি।’
নবগ্রাম এলাকার হাফিজুর মিলন বলেন, ‘প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে গরু লালন পালন করি। গত বছর এই সময় বাড়িতে ক্রেতাদের আনাগোনা থাকলেও এবার তাদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে, ভারতীয় গরুর আমদানি ও দেশের করোনা পরিস্থিতিতে গরু হাটে নিয়ে বিক্রি করতে পারবো বলে মনে হচ্ছেনা। তাই লোকসানের শঙ্কা ভর করেছে মনে। ন্যায্য দাম না পেলে পথে বসতে হবে।’
এদিকে খামারি শ্রমিকরা জানান, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে তারা গরু মোটাতাজা করতে তারা নির্ঘুম রাত পার করছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো পাইকারের দেখা মিলছে না। খামার মালিক যদি গরুর ন্যায্য দাম না পান তাহলে তাদের শ্রম ও মজুরি পাওয়া নিয়ে সমস্যা হবে। খামারে কাজ করে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া ও সংসার চলে বলে জানান তারা।
মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম জানান, জেলায় প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক গুরু পালন করেছেন খামারিরা। এছাড়া, ২২ হাজার ৮১৩টি ছাগল ও ৮ হাজার ৭৩০টি ভেড়া পালন করছেন তারা। এসকল কুরবানির পশু জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ সারাদেশের হাটগুলোতে বিক্রি হবে। ভালো দাম পাবেন তারা। তাই, ভারত থেকে গরু না আসলে খামারিদের লোকসানের কোনো শঙ্কা নেই।
মানিকগঞ্জ/বুলাকী
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন