ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

হাসপাতালে ফেলে যাওয়া নবজাতকের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ

কুমিল্লা প্রতিনিধি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০৮, ১২ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
হাসপাতালে ফেলে যাওয়া নবজাতকের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে পুলিশ

৫ জুলাই, দুপুর। কুমিল্লা মেডিক‌্যাল কলেজ হাসপাতালে অপরিণত বয়সেই জন্ম নেয় জমজ দুটি কন্যা শিশু। পরে একটি শিশু মারা যায়। অপর শিশুটির শারীরিক অবস্থাও ভালো নয়। গত ৭ জুলাই শিশুটিকে নগরীর ঝাউতলা মা ও শিশু স্পেশালাইজ হসপিটালে ভর্তি করেন তার বাবা মিজানুর রহমান।

ভর্তির আধঘণ্টা পর হাসপাতালে চিকিৎসার খরচের পরিমাণ জেনে চলে যান বাবা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাবাকে খোঁজাখুঁজি করে তার দেখা পায়নি।

এ ঘটনার চার দিন পর আজ রোববার (১২ জুলাই) হাসপাতালে আসেন শিশুটির মা শিরিন আক্তার। তিনি জানান, অর্থাভাবে সন্তানের চিকিৎসার খরচ দিতে পারছেন না তারা।

এ সংবাদ শুনে এগিয়ে আসেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. সৈয়দ নুরুল ইসলাম। রোববার দুপুরে তিনি নগরীর ঝাউতলায় মা ও শিশু স্পেশালাইজড হসপিটালে গিয়ে শিশুটির চিকিৎসার সব ব্যয় বহনের দায়িত্ব নেন।

শিশুটির বাবা মিজানুর রহমান জানান, তাদের বাড়ি ছিল কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আড়াইওড়ায়। এখন থাকেন চান্দিনায়। সেখানে একটি খাবার হোটেল আছে। করোনায় ব‌্যবসা ভালো না হওয়ায় চরম অর্থসংকটে দিন কাটছে। এ অবস্থায় শিশুকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানোর সামর্থ নেই তাদের। তাই বাধ‌্য হয়ে সন্তানকে হাসপাটালে ফেলে চলে যান।

শিশুটির মা জানান, ৫ জুলাই সিজারের মাধ‌্যমে দুটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। একটি মারা যায়। তিনি নিজেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চার দিন পর সুস্থ হয়ে জানতে পারেন, তার একটি সন্তান মারা গেছে এবং অপরটি ঝাউতলায় চিকিৎসাধীন। পরে তিনি সন্তানকে দেখতে ঝাউতলায় মা ও শিশু হাসপাতালে আসেন।

শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডা. জহিরুল আলম বলেন, ‘৭ জুলাই ভর্তি করানোর পর হাসপাতালে শিশুটির বাবা-মাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটি অপরিণত বয়সে জন্ম নিয়েছে। ২৮ সপ্তাহে জন্মগ্রহণ করা শিশুটির ওজন মাত্র ৭৫০ গ্রাম। বাবা-মাকে খুঁজে না পেলেও শিশুটির চিকিৎসা অব্যাহত রাখি। তবে শিশুটির ফুসফুসসহ অন্যান্য অঙ্গ অপরিপক্ক থাকায় আমরা একটু শঙ্কায় আছি।’

পুলিশ সুপার মো. সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘টাকার অভাবে হাসপাতালে নবজাতককে ফেলে যান বাবা-মা। এ সংবাদ জেনে খুব খারাপ লাগছিল। পরে ওই শিশুর বাবা-মাকে খুঁজে বের করে তাদের হাসপাতালে আসতে খবর পাঠাই। তারা হাসাপাতালে এসেছেন। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শিশুটির চিকিৎসার ব্যয় বহন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’

 

 

কুমিল্লা/ইমরুল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়