ভাঙা সড়ক সংস্কারে এগিয়ে এলো শিক্ষার্থীরা
মো. ইখতিয়ার উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম
ঝিনাইদহে মানুষের যাতায়াত দুর্ভোগ লাঘবে সড়ক সংস্কারে এগিয়ে এলো বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা।
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু থানার ভেড়াখালী গ্রামের পাকা সড়কে বেশ কিছু জায়গায় ভেঙে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এই রাস্তা থানার যানবাহন চলাচলের অন্যতম পথ। এ কারণে থানার এক অংশের মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। আর এ রাস্তা সংস্কারেই এগিয়ে এলো বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষার্থীদের সংগঠন ভেড়াখালী যুব উন্নয়ন সংঘ।
হরিণাকুণ্ডু থানার প্রধান সড়কের প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা ভেড়াখালী গ্রামের উপর দিয়ে গেছে। প্রতিদিন এ রাস্তা দিয়ে ছোট-বড় প্রায় ৩০০-৪০০ গাড়ি যাতায়াত করে। বর্ষার আগেই গ্রামের মধ্যে রাস্তায় ছোট ছোট ভাঙা ছিল। টানা বৃষ্টির কারণে রাস্তার এসব জায়গা ভেঙে বড় গর্ত তৈরী হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তা ভেঙে যাওয়ার কারণে যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। অনেক সময় ইজিবাইক বা ছোট ধরনের যানবাহন রাস্তার বড় ভাঙা গর্তে আটকে যাচ্ছে, তখন গাড়ি ওঠাতে যাত্রী অথবা স্থানীয়দের সহযোগিতা নিতে হচ্ছে। এছাড়া এসব স্থানে প্রায় সময়ই ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে। এ ভাঙা রাস্তা সংস্কারের জন্য বুধবার ও বৃহস্পতিবার ২৫ জন যুবককে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কাজ করতে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গ্রামের রাস্তার বেহাল অবস্থা দেখে আমরা নিজ উদ্যোগেই রাস্তা সংস্কারের কাজ করছি। রাস্তায় প্রায় ১০ ট্রলি ইটের টুকরা ও ২ ট্রলি বালু ব্যবহার করা হয়েছে। এ কাজের মালামাল ৩ কিলোমিটার দূর থেকে গাড়িতে করে নিয়ে আসা হয়েছে। যুবকেরা আরো জানিয়েছে, মালামাল গাড়িতে উঠানো ও নামানোর জন্য কোন শ্রমিক ভাড়া করা হয়নি। স্বেচ্ছাশ্রমে যুবকেরা মালামাল উঠানো, নামানো ও সংস্কারের সব কাজই করেছে।
রাস্তার গাড়ি চালকরা জানিয়েছেন, গ্রামের মধ্যে রাস্তার ভাঙা অংশগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এ রাস্তা সংস্কারে আমাদের সবার জন্য অনেক ভালো হয়েছে। তারা জানান, গ্রামের মধ্যে সংস্কার করে চালকদের কাছ থেকে যুবকেরা কোন টাকাও নেয়নি, এটা একটি বিরল ঘটনা।
এই সংস্কার কাজে অংশগ্রহণ করেন রাসেল অনিক, তরিকুল, ইমন, সুলতান, সিফাত, সাইদ, নয়ন, শাইম, অন্তর, হারুন, স্বপন, পারভেজ, শান্তসহ আরো অনেক শিক্ষার্থী।
ঢাকা কলেজের ছাত্র মোঃ মঞ্জুর রশীদ বলেন, রাস্তায় যানবাহন যাতে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে এ জন্য দেশের সচেতন নাগরিক হিসাবে আমরা এ সংস্কার কাজ করছি।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাইমুর রহমান বলেন, শহর বা গ্রামের যে সব রাস্তা বৃষ্টির কারণে ভেঙে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সে সব স্থানে যুবকেরা নিজ দায়িত্বে কাজ করলে সাময়িকভাবে হলেও দেশের মানুষের উপকার হবে।
লেখক :ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
ঢাকা/টিপু
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন