সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
সিলেটে নদীর পানি কমছে। এতে জেলার প্লাবিত নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামতে শুরু করেছে।
ইতোমধ্যে কুশিয়ারা নদীর একটি পয়েন্ট ছাড়া অন্য সবকটি নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি নামলেও দুর্ভোগ কমছে না বন্যাকবলিত মানুষের।
সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে মাত্র ৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। শনিবার (২৫ জুলাই) সকাল থেকে সিলেটের আকাশে সূর্যের দেখা মিলেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সকাল ৯টার তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে সিলেট পয়েন্টেও বিপৎসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহমাণ রয়েছে।
কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও আমলশীদ, শেওলা এবং শেরপুর পয়েন্টে বেশ কয়েক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময়ে সারি নদীর সারি পয়েন্ট এবং লোভা ও ধলাই নদের পানিও কমেছে।
উজানে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকার কারণে গত ২১ জুলাই থেকে চতুর্থ দফায় বন্যার কবলে পড়ে সিলেটের চারটি উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। বিশেষ করে করোনা সংকটের মধ্যে বন্যা তাদের মরার উপর খাড়ার ঘা হিসেবে দাঁড়ায়।
বন্যা কবলিত উপজেলাগুলো হচ্ছে- গোয়াইঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট। এছাড়া ফেঞ্চুগঞ্জসহ নদী তীরের আরও কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চলেও পানি ঢুকে পড়ে। কয়েক দফার বন্যায় তলিয়ে যায় ঘর-বাড়ি, সড়ক, বীজতলা, মাছের খামার।
গোয়াইনঘাট উপজেলার সংবাদকর্মী রাসেল আহমদ সিরাজী জানান, গত দুই মাসে চারদফা বন্যায় উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। তার নিজের বাড়ি আলীরগাঁও ইউনিয়নে। বন্যায় তার বসতঘরেও পানি ঢুড়ে পড়ে। পানি কমতে শুরু করেছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতির শিকার হয়েছেন হাওরাঞ্চলের মানুষ। তাদের অনেকের ঘর এখনও বসবাসের অনুপযুক্ত। মাটির ঘর কাদা-মাটিতে একাকার হয়ে আছে। বেশিরভাগ হতদরিদ্র লোকের ঘরে খাবারের সংকট রয়েছে।
শনিবার (২৫ জুলাই) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। উজানের ঢলও নামছে না। যে কারণে নদ-নদীর পানি কমছে।
সিলেটে গত ২৭ মে থেকে প্রথম দফায় ও ২৬ জুন থেকে দ্বিতীয় দফায় বন্যা হয়। এরপর পরিস্থিতির উন্নতি হলে ১১ জুলাই থেকে তৃতীয় দফায় বন্যা্ দেখা দেয়। এই দফার পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হলে এক সপ্তাহের মাথায় ফের চতুর্থ দফায় বন্যা শুরু হয়।
সিলেট/নোমান/বকুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন