ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ট্রেনে টিকিট সংকট, কষ্টে হবিগঞ্জের যাত্রীরা

মামুন চৌধুরী || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১৩, ৫ ডিসেম্বর ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ট্রেনে টিকিট সংকট, কষ্টে হবিগঞ্জের যাত্রীরা

আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে সেকশনের সিলেট বিভাগে পাঁচটি জংশন ছিল। এর মধ্যে অন্যতম ছিল শায়েস্তাগঞ্জ জংশন। বর্তমানে এ জংশনটি হবিগঞ্জ জেলার একমাত্র রেলওয়ে জংশন হিসেবে গুরুত্ব বহন করছে।

প্রতিদিন এখান থেকে বিভিন্ন লোকাল ও আন্তঃনগর ট্রেনযোগে প্রায় এক হাজার থেকে দেড় হাজার যাত্রী দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করেন। ট্রেন ভ্রমণের পূর্বে টিকিট ক্রয় করতে হয়। এ সময় দেখা দেয় বিড়ম্বনা। এখানে টিকেট পাওয়া যেন সোনার হরিণ।

অনেকেই টিকিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে স্ট্যান্ডিং টিকিট (দাঁড়ানো টিকিট) নিয়ে প্রচণ্ড ভিড়ে ট্রেন ভ্রমণ করেন। আবার অনেক যাত্রী ভেতরে জায়গা না পেয়ে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন। এতে অনেক যাত্রীরা দুর্ঘটনা ও পকেটমার আর ছিনতাইকারীর শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থা দীর্ঘদিনের। বিষয়টি নিয়ে ট্রেন যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সূত্র জানায়, শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে ঢাকাগামী উপবনের ৫৫টি, পারাবতের ৩০টি, কালনীর ৪৫টি, জয়ন্তিকার ৬২টি, চট্টগ্রামগামী উদয়নের ৪০টি, পাহাড়িকার ৩০টি, নোয়াপাড়ায় স্টেশনে পারাবতের ১৫টি, জয়ন্তিকা ২৫, পাহাড়িকা ২০ টিকেট ও শাহজীবাজার স্টেশনে জয়ন্তিকার ১৫টি রয়েছে। সবমিলিয়ে প্রতিদিন আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট সংখ্যা ৩৩৭টি। যাত্রী সংখ্যা দুই থেকে আড়াই হাজার। এজন্য সবার পক্ষে ট্রেনের টিকিট পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দিন দিন সংকট বাড়ছে।

হবিগঞ্জ শহরের বাসিন্দা ট্রেন যাত্রী শাকিল চৌধুরী রাইজিংবিডিকে বলেন, ঢাকায় যাব। টিকিট পাইনি। তারপরও গন্তব্যে ফিরতে হবে। এজন্য আসনবিহীন টিকেট ক্রয় করেছি। যেতে হবে দাঁড়িয়ে।

বাহুবল উপজেলা শহরের বাসিন্দা সৈয়দ আব্দুল মান্নান পরিবার নিয়ে চট্টগ্রাম যাবেন। তিনিও টিকিট পাননি। তাই তিনি আসনবিহীন টিকিট কিনেছেন।

শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার এবিএম সাইফুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, যাত্রী পরিমাণ হিসেবে ট্রেনের আসন সীমিত। যাত্রী বাড়লেও আসন সংখ্যা বাড়ছে। ফলে দিন দিন যাত্রী দুর্ভোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা যাত্রী সেবায় কাজ করছি।

তিনি বলেন, টিকিট বৃদ্ধির জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে বলা হয়েছে। বর্তমানে কালোবাজারি নেই বললেই চলে।

স্টেশন মাস্টার বলেন, ঈদ এলে যাত্রী চারগুণ বৃদ্ধি পায়। যাত্রী সামাল দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। আসনসহ জরুরি ভিত্তিতে টিকিট সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন।

শায়েস্তাগঞ্জ উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি গাজীউর রহমান ইমরান রাইজিংবিডিকে বলেন, কর্তৃপক্ষের কাছে দীর্ঘদিন ধরে টিকিট বৃদ্ধির জন্য দাবি জানালেও কোনো কাজ হচ্ছে না। জরুরি ভিত্তিতে টিকিট বৃদ্ধি না করা হলে অচিরেই যাত্রীদের নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে।

শায়েস্তাগঞ্জ অলক্রাইম প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও সাবেক পৌর প্যানেল মেয়র এমএ তাহের তালুকদার রাইজিংবিডিকে বলেন, যাত্রীদের কথা চিন্তা করে টিকিট বাড়ানো প্রয়োজন।

শায়েস্তাগঞ্জ থানার ওসি মোজাম্মেল হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, যাত্রী সেবার কথা চিন্তায় এনে এ জংশন কালোবাজারি মুক্ত রাখতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

তিনিও টিকিট বাড়ানোর জন্য দাবি করেছেন।

শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ জানায়, দিন দিন যাত্রী বেড়েই চলেছে। বাড়ছে না ট্রেনের আসন ও টিকিট। এজন্য অনেক যাত্রীকে ট্রেনে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে হচ্ছে। এ অবস্থা পরিবর্তন করতে হলে টিকিট বাড়ানো ছাড়া বিকল্প পথ নেই।

 

হবিগঞ্জ/মামুন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়