ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

কেমিক্যাল মিশ্রিত বর্জ্যে বিষাক্ত শীতলক্ষ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:২২, ২৯ জানুয়ারি ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কেমিক্যাল মিশ্রিত বর্জ্যে বিষাক্ত শীতলক্ষ্যা

শীতলক্ষ্যা নদীতে বছরে ফেলা হচ্ছে কেমিক্যাল মিশ্রিত লক্ষাধিক ঘন মিটার বর্জ্য। এসব বজ্র্য এফলুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টে (ইটিপি) শোধনের কোন নিয়মই কেউ মানছেন না।

এই প্ল্যান্ট ব্যাবহারে খরচ বেশি হওয়ার অজুহাতে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে ইটিপিকে এড়িয়ে চলছেন। পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযানকালে কিছু প্রতিষ্ঠান লোক দেখানো ইটিপি চালু রাখেন বলে অভিযোগ বাপার।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) নারায়ণগঞ্জের সভাপতির অভিযোগ, পরিবেশ অধিদপ্তর নামমাত্র অভিযান করছে। সঠিকভাবে এর আইন বাস্তবায়ন না করায় দিনের পর দিন দূষিত বর্জ্য ফেলে নদীর পানি দূষিত করছে নদীপাড়ের শিল্পকারখানা।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইন মেনেই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ম্যাজিস্ট্রেট মিডিয়া সাথে নিয়েই অভিযান পরিচালিত হয়। এখানে আইন অমান্য করার কোন সুযোগ নেই।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জ, কাঁচপুর সহ পাঁচটি উপজেলায় গড়ে উঠা ডাইং, পেপার মিল সুগার মিলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কেমিক্যাল মিশ্রিত লক্ষাধিক ঘন মিটার বর্জ্য প্রতি বছর ফেলা হচ্ছে শীতলক্ষ্যায়।

নারায়ণগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জে ৪০৭টি প্রতিষ্ঠানে ইটিপি থাকার কথা থাকলেও ইটিপি আছে মাত্র ৩০২টি প্রতিষ্ঠানে। বাকি ১০৫টি প্রতিষ্ঠানে ইটিপি নেই। এই ১০৫টির মধ্যে ১৯টি প্রতিষ্ঠানে ইটিপি নির্মাণ কাজ চলছে। আর বাকি ৮৬টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে পারছেনা পরিবেশ অধিদপ্তর।

তবে গত চার মাসে তারা ভ্রাম্যমান অভিযান চালিয়ে ডাইংসহ ২৫টি প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ কোটি টাকার অধিক জরিমানা করা হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জে যেসব প্রতিষ্ঠানের কেমিক্যাল মিশ্রিত দূষিত বর্জ্য নদীর পানি দূষণ করছে তার মধ্যে রয়েছে ডাইং, পেপার মিল, সুগার মিল। তবে এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ডাইং প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান জানিয়েছেন, নদী রক্ষার ক্ষেত্রে হাই কোর্টের যে নির্দেশ রয়েছে, শীতলক্ষ্যা রক্ষায় তা সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এক সময়ের স্বচ্ছ শীতলক্ষ্যা আজ বিষাক্ত পানির আধারে পরিণত হয়েছে।

এক জরিপে দেখা গেছে, নদীর পানিতে মাছসহ জীববৈচিত্র্য টিকে থাকার জন্য নূন্যতম (০৪.০৫) চার দশমিক পাঁচ মিলিগ্রাম অক্সিজেন থাকার কথা। সেখানে শীতলক্ষা নদীর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ (০০.০৪) শূন্য দশমিক চার মিলিগ্রাম।

বাপা’র নারায়ণগঞ্জ শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট এবি সিদ্দিক বলেন, নদী রক্ষা আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না করায়, নদী রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ছে।’


নারায়ণগঞ্জ/ রাকিব/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়