ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

করোনায় বিপর্যস্ত কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প

সুজাউদ্দিন রুবেল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১১, ৫ এপ্রিল ২০২০   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
করোনায় বিপর্যস্ত কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প

করোনাভাইরাসের প্রভাবে কক্সবাজার জেলার পর্যটন শিল্প এবং শুটকি মাছ উৎপাদনে ধস নেমেছে।

ভাইরাসের প্রার্দুভাব থেকে জেলাবাসীকে রক্ষার জন্য ২৫ মার্চ থেকে পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসাবাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। শুটকি উৎপাদনের মৌসুম হলেও সাগরে ট্রলার তেমন না যাওয়ায় বন্ধ রয়েছে মাছ আহরণ ও শুটকি উৎপাদন।

পহেলা বৈশাখ, ঈদুল ফিতরের উৎসব  সামনে থাকা সত্ত্বেও বস্ত্র ব্যবসায়ীদের এখন মাথায় হাত। এসব শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। 

পর্যটন জেলা কক্সবাজারে প্রতিবছর ২০ লাখের বেশি পর্যটক আসে। তাদের যাতায়াতে প্রতিদিন দুই শতাধিক দূরপাল্লার বাস ও ১০/১২টি বিমান নিয়োজিত থাকে। তাদের থাকার জন্য সাড়ে চার শতাধিক হোটেল, মোটেল ও কটেজ এবং খাওয়ার জন্য পাঁচ শতাধিক রেস্তোরাঁ রয়েছে। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য রয়েছে নানা পর্যটন স্পট। তাদের প্রিয় মুহূর্ত ফ্রেমে বন্দি করে রাখার জন্য ব্যস্ত থাকে তিন শতাধিক ক্যামেরাম্যান। শামুক ঝিনুকের বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন সহ্স্রাধিক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সবাই এখন অলস সময় কাটাচ্ছে।

এ বিষয়ে ফেডারেশন ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাশেম বলেন, ২৫ মার্চ থেকে পর্যটন ব্যবসা বন্ধ রয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। কেননা রমজান মাসে পর্যটকের সমাগম তেমন ঘটে না। এতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট খাতে দৈনিক ৫০ কোটি টাকার লেনদেন বন্ধ রয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ব্যবসা বন্ধ থাকলেও মেইনটেইনস খরচ গুনতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সাড়ে চারশত হোটেল, মোটেল ও কটেজ মালিককে দুই মাসে কমপক্ষে ৫৪ কোটি লোকসান গুনতে হবে। এছাড়া ব্যাংক লোনের সুদ গুনতে হবে।

এভাবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিটি খাতে লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।

উৎপাদনের পুরো মৌসুম হলেও শুটকি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। খুব কম সংখ্যক জেলে সাগরে যাচ্ছে। তারা যে মাছ ধরছে, তা শুকানোর জন্য শ্রমিকও মিলছে না। এই খাতের সংশ্লিষ্টদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে।

নাজিরারটেক শুটকি উৎপাদন মালিক সমিতির সভাপতির আতিকুর রহমান বলেন, তাদের কাছে ৬ হাজার মেট্রিক টন শুটকি মাছ মজুদ রয়েছে। এখন সাগরে মাছ ধরা কমে যাওয়ায় মাছ শুকানো অর্ধেক কমে গেছে।

তিনি বলেন, তাদের বেশিরভাগ গুদাম শুকনো মাছে ভরপুর। চাহিদা না থাকায় মাছ পাঠাতে পারছেন না। অথচ গত বছর এই সময় চাহিদার তুলনায় মাছ জোগান দিতে তাদের হিমশিম খেতে হয়।

কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজাম্মান বলেন, জেলেরা করোনাভাইরাস আতঙ্কে সাগরে যাচ্ছে না। মাছ শুকানো গত বছরের তুলনায় ৪০ ভাগ কমে গেছে। প্রত্যেকের গুদামে মাছ মজুদ রয়েছে।

করোন পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে লোকসান হিসাব করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির কক্সবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম মুকুল বলেন, সামনে বৈশাখ উৎসব। গত বছর এই সময়ে জেলায় শত কোটি টাকার বস্ত্র ও জুতা বিকিকিনি হয়েছে। এবার দোকান বন্ধ।

 

ঢাকা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়