ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

করোনায় বিপাকে বাড়িওয়ালারা, মিলছে না ভাড়াটিয়া

রেজাউল করিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:২৮, ১১ জুলাই ২০২০   আপডেট: ১০:৩৯, ২৫ আগস্ট ২০২০
করোনায় বিপাকে বাড়িওয়ালারা, মিলছে না ভাড়াটিয়া

করোনা পরিস্থিতিতে চাকরি হারা, আয় কমে যাওয়াসহ নানা প্রতিকূলতায় শহর ছাড়ছে বিপুল সংখ্যক মানুষ। এর প্রেক্ষিতে একের পর খালি হচ্ছে বাসা। ‍টু লেট ঝুলছে নগরীর প্রায় প্রতিটি আবাসিক ভবনে।

২০ থেকে ৪০ শতাংশ ভাড়া কমিয়েও ভাড়াটিয়া পাচ্ছেন না বাড়িওয়ালারা। চট্টগ্রাম মহানগরীর চাঁন্দগাঁও আবাসিক এলাকা, সিডিএ আবাসিক এলাকা, কল্পলোক আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকা ঘুরে একই চিত্র দেখা গেছে।

নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার একটি আবাসিক ভবনের মালিক জসিম উদ্দিন রাইজিংবিডিকে জানান, তার ভবনে দুটি ফ্ল‌্যাট দুই মাস ধরে খালি পড়ে আছে। আরো একটি ফ্ল‌্যাটের ভাড়াটিয়া বাসা ছাড়বেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এখন নতুন করে ভাড়াটিয়া আসছেন। আগে যে ফ্ল‌্যাটের ভাড়া ১৭ হাজার টাকা ছিলো, সেই বাসা এখন ১৩ হাজার টাকা করা হয়েছে। তার পরও ভাড়াটিয়া মিলছে না।

নগরীর কল্পলোক আবাসিক এলাকার প্রায় সব আবাসিক ভবনের সামনেই ঝুলছে টু-লেট। সেখানকার একটি আবাসিক ভবনের মালিক হাজী হামিদুর রহমান বলেন, ‘একের পর এক বাসা ছাড়ার কথা জানাচ্ছে ভাড়াটিয়ারা। ভাড়া অনেক কমিয়ে দিয়েও নতুন ভাড়াটিয়া পাওয়া যাচ্ছে না।’

নগরীর চান্দগাঁও থানার চন্দ্রীমা আবাসিক এলাকার একটি ভবন মালিক আবদুল হক রাইজিংবিডিকে জানান, তার ভবনে তিন বেডের ফ্ল‌্যাট আগে ১৬ হাজার টাকায় ভাড়ায় ছিলো। ভাড়াটিয়া চলে যাওয়ার পর এখন ১২ হাজার টাকা করে দেওয়ার পরও ভাড়াটিয়া মিলছে না।

নগরীর একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে জানান, করোনা পরিস্থিতির কারণে ১৪ হাজার টাকা ভাড়ার বাসা ছেড়ে কম ভাড়ার বাসায় চলে যেতে হচ্ছে। ঠিক মতো বেতন মিলছে না। কর্তৃপক্ষ অনিয়মিত বেতন দেওয়ার পাশাপাশি বেতনও কমিয়ে দিয়েছে। এই অবস্থায় ১৪ হাজার টাকার বাসা ছেড়ে দিয়ে আট হাজার টাকায় ছোট বাসায় উঠতে হচ্ছে।

নগরীর বায়েজিদ থানা এলাকার সাত হাজার টাকায় ভাড়া বাসায় বসবাসকারী একটি গার্মেন্টস কারখানার কর্মী সাবিনা আক্তার রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘চাকরি নেই দুই মাস। এখন আর শহরে এতো টাকা ভাড়া দিয়ে থাকার সামর্থ নেই। তাই বাসা ছেড়ে দিয়ে গ্রামে চলে যাচ্ছি।’

একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে নগরীর নাসিরাবাদ, সুগন্ধা, হালিশহর, চকবাজার, বহদ্দারহাট, অক্সিজেনসহ বিভিন্ন এলাকায়। এসব এলাকায় শত শত ভবনে ঝুলছে টু-লেট।

কনজ্যুমার অ‌্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন রাইজিংবিডিকে জানান, করোনা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির প্রায় লক্ষাধিক মানুষ চাকরি হারিয়েছেন। তাদের আর শহরে থাকার সামর্থ নেই। আবার অনেকের বেতন বকেয়া পড়েছে। অনেকের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে। ফলে অনেকে আগের ছেড়ে কম ভাড়ায় ছোট বাসায় উঠছেন। এমন অবস্থায় ভাড়াটিয়া ও বাড়িওয়ালা উভয়ের ওপর প্রভাব পড়ছে। একদিকে ভাড়াটিয়া না পেয়ে বাড়িওয়ালাদের আয় বন্ধ কমে গেছে, অপরদিকে উপার্জনের পথ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভাড়াটিয়ারা শহর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।


রেজাউল করিম/সনি

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়